শারমিন আঁখির শারীরিক অবস্থা জানতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক সামন্ত লাল সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘তাঁর শরীরের ৩৫ ভাগ অংশ পুড়ে গেছে (ডিপ বার্ন)। তাঁর শ্বাসনালি পুড়ে গেছে, খুব একটা শঙ্কামুক্ত নয়।’
শারমিন আঁখির স্বামী নাট্য পরিচালক রাহাত কবির ঘটনার সময় শুটিং বাড়ির নিচেই ছিলেন। তিনি বলেন, ‘শব্দ শুনে সঙ্গে সঙ্গে ওপরে যাই। গিয়ে দেখি আঁখির হাত, পা, মুখ পুড়ে ঝলসে গিয়েছে। পোড়া চামড়ার কিছু অংশ খুলে পড়ছিল। পরে চিকিৎসকেরা হাতের কনুই পর্যন্ত চামড়া কেটে ফেলেছেন, ঊরুর চামড়াও কাটতে হয়েছে। মুখের কিছু অংশ পুড়েছে। সব মিলিয়ে অবস্থা গুরুতর।’
রাহাত আরও বলেন, ‘চিকিৎসক জানিয়েছেন আপাতত সাত দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তাঁর শরীরের ৩৫ ভাগ পুড়ে গেছে। টানা এক মাস ড্রেসিং করতে হবে। সব মিলিয়ে সেরে উঠতে দীর্ঘ সময় লাগবে।’
আশফাকুল আলম বলেন, ‘আমরা কিছুই বুঝতে পারছি না, কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটল। তবে নতুন বাসা, মেকআপ রুমে গ্যাস জমে থাকতে পারে।’ আঁখির স্বামী রাহাত বলেন, ‘পরে আমি আঁখির কাছে জানতে চেয়েছিলাম কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সে আমাকে জানায় শুটিংয়ের জন্য তৈরি হতে চুল স্ট্রেট করে নিচ্ছিল। সকেট থেকে স্ট্রেট মেশিনের প্লাগ খোলার সময় ভয়াবহ শব্দ হয়। পরে আর তার কিছু মনে নেই। ধারণা করা হচ্ছে, রুমে গ্যাস জমে ছিল, স্পাকিং থেকে আগুন ধরে যায়।’
ইমদাদুল হক মিলনের ‘প্রিয় দর্শনী’ উপন্যাস অবলম্বনে ‘অমীমাংসিত প্রেম’ নামে একটি নাটকের শুটিংয়ের প্রথম দিন ছিল গতকাল। দুর্ঘটনায় শুটিং আপাতত বন্ধ। শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন সজল, মৌসুমী হামিদসহ আরও অনেক অভিনয়শিল্পী। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অভিনয়শিল্পী বলেন, ‘শুটিংয়ে বেশির ভাগ সময় আমাদের ঝুঁকি নিয়ে শুটিং করতে হয়। ইলেকট্রিক বিভিন্ন বিষয়ে শুটিং বাড়িগুলো তেমন সতর্ক নয়। শুটিংয়ের সময় কেব্ল, প্লাগ, বৈদ্যুতিক লাইন যেখানে–সেখানে ফেল রাখা নিত্যদিনের ঘটনা। এমন অসতর্কতার মধ্যে শুটিং করি জানলে পরিবারের লোকেরা আমাদের শুটিংই করতে দেবে না। এই বিষয়গুলোকে কেউ গুরুত্ব দেয় না। শুটিং বাড়ি কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকলে শারমিন আঁখি অগ্নিদগ্ধের ঘটনা এড়ানো যেত।’