শিগগির জানা যাচ্ছে না নিহতের প্রকৃত সংখ্যা

0
21
নিহতের প্রকৃত সংখ্যা

কোটা সংস্কার থেকে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলন। গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর হামলা-সহিংসতা। এর মধ্যেই নিভেছে শত শত প্রাণ। আদতে কত প্রাণক্ষয়? কত আহত, কত পঙ্গু কিংবা কতজনই বা হারিয়েছেন চোখের আলো– এসব নিয়ে এখনও রয়েছে ধোঁয়াশা। কারও কাছে নেই নিহত-আহতের সঠিক পরিসংখ্যান। তবে হতাহত ব্যক্তির পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এজন্য ১৩ সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

জাতিসংঘ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ১৬ জুলাই থেকে ১১ আগস্ট পর্যন্ত অন্তত ৬৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমকে সদ্য সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা (বর্তমানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, ছাত্র আন্দোলনে এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আন্দোলন ঘিরে হতাহতের তথ্য সংগ্রহে ছাত্রদের উদ্যোগে তৈরি হয় ‘শহীদ ইনফো’ নামে একটি ওয়েবসাইট। গতকাল শনিবার পর্যন্ত সেখানে ৪৯০ জনের বেশি নাম-পরিচয় উঠেছে। আহত অন্তত ৩৩ হাজার। আর সমকাল নিজস্ব অনুসন্ধানে গতকাল পর্যন্ত অন্তত ৬২২ জন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত হতে পেরেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনে নিহত অনেকের লাশ হাসপাতালে নেওয়া হয়নি। আবার অনেকে হৃদরোগ, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন বলে নথিভুক্ত হয়। কারও লাশ দাফন করা হয় বেওয়ারিশ হিসেবে। প্রতি মাসে গড়ে ৪৫টি নাম-পরিচয়হীন লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। তবে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় ৮৩টি লাশ দাফন করে এ সংগঠন, যাদের শেষ ঠিকানা হয়েছে রায়েরবাজার ও জুরাইন কবরস্থানে। সহিংসতা নিহত এক শিশুসহ ২১ জনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম। ছাত্র আন্দোলনে গিয়ে কেউ কেউ এখনও ঘরে ফেরেননি। তাদের খোঁজে হাসপাতালেও ঘুরছেন স্বজনরা। আবার মেডিকেল কলেজের মর্গে কিছু লাশ পড়ে আছে। এসব লাশের কোনো দাবিদার পাচ্ছে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সব মিলিয়ে এ আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলি ও বলপ্রয়োগ এবং সরকার পতনের পর সহিংসতায় কতজনের প্রাণ গেছে– এর সঠিক সংখ্যা সহসা জানা সম্ভব নয় বলে মনে করছেন মানবাধিকারকর্মী ও আইনজীবীরা। প্রকৃত সংখ্যা বের করতে পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি দেওয়ার পরামর্শ দেন তারা।

এদিকে বিএনপি দলীয়ভাবে দেশের প্রতিটি জেলা, মহানগর ও উপজেলায় চিঠি পাঠিয়ে নিহত-আহতের তালিকা কেন্দ্রে পাঠাতে নির্দেশনা দিয়েছে। অনেক স্থানের তথ্য এখনও আসেনি বলে পুরো পরিসংখ্যান প্রকাশ করতে পারেনি দলটি। কয়েক দিনের মধ্যেই এ তালিকা চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে। তবে গতকাল ছাত্রদল জানায়, আন্দোলনে তাদের ৩৩ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।

পুলিশের নবনিযুক্ত আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম জানিয়েছেন, পুলিশের ৪২ সদস্য নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জন র‍্যাবে কর্মরত ছিলেন। নিহতের এই সংখ্যা নিয়ে বাহিনীর কারও কারও সংশয় আছে। তাদের ভাষ্য– পুলিশে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি। এ ছাড়া ৪ থেকে ৬ আগস্ট যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী ২৪ জন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ৮৫ জন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে, ৪ থেকে ৬ আগস্ট বিএনপির ১২ নেতাকর্মী মারা গেছেন। তাদের মধ্যে দু’জন ছাত্রদল এবং একজন যুবদল নেতা রয়েছেন।

কী বলছেন বিশ্লেষকরা

ব্যারিস্টার সারা হোসেন বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলন স্তব্ধ করতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো অনেক ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে অনেক হতাহত হয়েছে। নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তার করা হয়। হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা বের করা দরকার। জাতিসংঘ স্বতন্ত্র ও নিরপেক্ষ তদন্ত করলে সঠিক সংখ্যা বেরিয়ে আসবে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গা থেকে যে হিসাব পাচ্ছি, এর সবক’টিতে নিহতের সংখ্যা ছয়শর বেশি।

সারা হোসেন আরও বলেন, আন্দোলনের সময় মারা যাওয়া অনেকে কাউন্সিলর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ‘হৃদরোগে মারা গেছেন’ এমন প্রত্যয়নপত্র নিতে বাধ্য হয়েছেন। কে কীভাবে হতাহত হয়েছেন এর সঠিক তথ্য ন্যায়বিচারের জন্য ভুক্তভোগীর পরিবারের জানা জরুরি। এ ছাড়া এখনও আহত শত শত মানুষ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাদের পাশে সরকারি-বেসরকারিভাবে সবাইকে দাঁড়ানো উচিত।

মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, এত বীভৎস ও ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে, অনেকের লাশ রাস্তায় পড়ে ছিল। চিকিৎসা দিতে হাসপাতাল হিমশিম খেয়েছে। ময়নাতদন্ত ছাড়া অনেকে লাশ নিয়ে গেছেন। ফলে সহসা নিহতের প্রকৃত সংখ্যা চূড়ান্তভাবে জানা সম্ভব নয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গণমাধ্যমে একটি গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারে। এতে হতাহতের সংখ্যা জানা যেতে পারে। এনজিও এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে কাজে লাগাতে পারে তারা। কারণ তৃণমূল পর্যন্ত তাদের নেটওয়ার্ক আছে।

সমন্বয়ক বাকেরের ভাষ্য

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার মনে করেন, নিহতের প্রকৃত সংখ্যা এখনও নিরূপণ করতে না পারাটা ব্যর্থতা। সরকার একটি সেল গঠনের মাধ্যমে কাজটি করতে পারে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় সমাজকল্যাণ দপ্তরকে কাজে লাগিয়ে জেলাভিত্তিক নিহতের পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করতে পারে। এ ছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি দলও নিহতদের তালিকা তৈরির কাজটি করছে বলে জানান তিনি।

সমকালের তথ্য অনুসন্ধান

১৬ জুলাই থেকে গতকাল পর্যন্ত ৬২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৫৩২ জনের মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সমকাল সংগ্রহ করেছে। তার মধ্যে ১৬ জুলাই থেকে ৪ আগস্ট পর্যন্ত ৩৫২ জন। আর ৫ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত ২৭০ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে অন্তত ৬৫ জন শিশু-কিশোর। সমকালের পরিসংখ্যান বলছে, ১৬ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ২০৯ জন নিহত হয়। তাদের অধিকাংশের শরীর ছিল বুলেটবিদ্ধ। ২০৯ জনের মধ্যে ১৮০ জনের পরিচয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ছাত্র রয়েছেন ৪৫ জন। আগস্টের প্রথম সপ্তাহে অনেকের প্রাণ গেছে। ২ আগস্ট মারা গেছেন তিনজন, ৩ আগস্ট একজন, ৪ আগস্ট ১০১ জন, ৫ আগস্ট ১৫৩ জন। ওই ১৫৩ জনের মধ্যে সরকার পতনের আগে ৭৬ জন। ৬ আগস্ট মারা গেছেন ৫৩ জন। এর পর অনেকে হতাহত হয়েছেন। সর্বশেষ গতকাল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ছাত্রদল কর্মী রিয়াজ।

ঢাকার বাইরে নিহত ২৮৫ জনের তথ্য বিশ্লেষণ করেছে সমকাল। তাতে দেখা যায়, বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ৫ আগস্ট দুপুর পর্যন্ত শুধু গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন অন্তত ৮১ জন। পরে অন্তত ৬৬ জনের মৃত্যুর কারণ গুলি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সাংবাদিক নিহত হয়েছেন চারজন। তাদের মধ্যে ঢাকার বাইরে সাংবাদিক মারা গেছেন তিনজন। শিক্ষক রয়েছেন দু’জন। বিপুলসংখ্যক সাধারণ মানুষও মারা গেছেন পুলিশের গুলি ও সহিংসতায়। সরকার পতনের আগে ১০ জন গাড়ি-রিকশাচালক, ৭ জন দোকানসহ ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী, দু’জন কৃষক, ৭ জন ব্যবসায়ী, একজন ইলেকট্রিক মিস্ত্রি, দু’জন গৃহকর্মী ও নিরাপত্তাকর্মী নিহত হন। আর পতনের পর মারা গেছেন একজন জনপ্রতিনিধি, একজন সরকারি চাকরিজীবী, দু’জন ব্যবসায়ী, তিনজন শ্রমিক, তিনজন গাড়ি-রিকশাচালক, দু’জন দোকান কর্মচারী।

সরকার পতনের আগে ২৬ জনকে পিটিয়ে ও দু’জনকে কুপিয়ে এবং পতনের পর সহিংসতায় ১৪ জনকে কুপিয়ে ও পাঁচজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পাঁচজনকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। বিভিন্ন স্থাপনায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে সরকার পতনের পর ৪৭ এবং আগে দু’জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে ৫ আগস্ট দুপুরের পর যশোরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদারের মালিকানাধীন হোটেল জাবির ইন্টারন্যাশনালে দেওয়া আগুনে ২৭ জন নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক রয়েছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক। এ ছাড়া সংঘর্ষের মাঝে পড়ে আতঙ্কে, পুলিশের ধাওয়ায় ও পালাতে গিয়ে পানিতে ডুবে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।

সাভার ও আশুলিয়ায় আন্দোলন সহিংসতায় শিক্ষার্থীসহ মোট ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচজন পুলিশ সদস্য। গত ১৮ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সহিংস ঘটনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়। সরকার পতনের পর থেকে ৬ আগস্ট পর্যন্ত আরও ৩৯ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ২২, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল থেকে ৯, আশুলিয়ার নারী ও শিশু হাসপাতাল থেকে ৩ এবং সাভার থানার সামনে ৫ জনের লাশ পাওয়া যায়।

মেলেনি অনেকের পরিচয়

১৬ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৯৮ জনের ময়নাতদন্ত হয়। তাদের মধ্যে ১৮ জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪১ জনের ময়নাতদন্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে চারজনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ১৯টি লাশ এসেছে। তাদের মধ্যে চারজনের ময়নাতদন্ত করা হয়। বাকিগুলো ময়নাতদন্ত ছাড়া পরিবারের কাছে দেওয়া হয়।

পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরিতে ১৩ সদস্যের কমিটি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা ও নিহত পরিবারকে সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিচিতিসহ একটি পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ তালিকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে সেবা নেওয়া ব্যক্তিদের যুক্ত করা হবে। এ বিষয়ে এক প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি, অর্থ বিভাগ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মুহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে এ কমিটি করা হয়েছে।

সরকারি হাসপাতালে ৪০৭ জনের লাশ

দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৮ হাজার ৫৭৬ জন। তাদের মধ্যে ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়। আহত গুরুতর হওয়ায় ভর্তি রেখে চিকিৎসা দিতে হয়েছে ৪ হাজার ৫৫৪ জনকে। সর্বোচ্চ আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটেছে ঢাকায়। গত ১৬ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দেশের সরকারি হাসপাতাল থেকে পাওয়া হতাহতের প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এ পরিসংখ্যান তৈরি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বেশির ভাগ লাশ ময়নাতদন্ত করে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে কিছু লাশ কারও কারও স্বজন জোর করে নিয়ে গেছেন। এরই মধ্যে নতুন করে বেসরকারি হাসপাতালের হতাহতের তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিসংখ্যানবিষয়ক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৬ জুলাই থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ ৭৪ হাসপাতালের তথ্য যুক্ত করা হয়েছে। এই ২৭ দিনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসাদের মধ্যে ১১৭ জনই ছিলেন মৃত এবং ২৯০ জন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে আহত হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১০ হাজার ৫৭৬ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৩৮ জনের। ঢাকার বাইরে মৃত্যু বেশি হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে। এ বিভাগে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৯৩২ জন। এ ছাড়া খুলনা বিভাগে ৩৫ জন, রংপুর বিভাগে ২৬, রাজশাহী বিভাগে ২৩, সিলেট বিভাগে ২৩, ময়মনসিংহ বিভাগে ১২ এবং বরিশাল বিভাগে দু’জন নিহত হয়েছেন।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেকের অঙ্গহানি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেকের চোখ। কারও কারও শরীরে গুলি লাগায় সে অঙ্গ কেটে ফেলতে হয়েছে।

বেসরকারি হাসপাতালে অনেক আহতের চিকিৎসা

রাজধানীর চার এলাকার বড় বড় হাসপাতালে হাজার হাজার ব্যক্তি আহত হয়ে সেবা নিয়েছেন। সংঘর্ষপ্রবণ রামপুরার ফরাজী হাসপাতাল এবং বাড্ডার এএমজেড হাসপাতালে আসেন ১ হাজার ৮০০ ব্যক্তি। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ২৩ জন। আহতদের ৯০ শতাংশই ছিলেন গুলিবিদ্ধ। রামপুরা, বাড্ডা, বনশ্রী এলাকায় আহতদের অন্য হাসপাতালেও নেওয়া হয়েছিল। সেগুলোর তথ্য পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া উত্তরার কুয়েত মৈত্রী, আধুনিক এবং ক্রিসেন্ট হাসপাতালে হাজারের বেশি আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নেন।

সাহাদাত হোসেন পরশ, ইন্দ্রজিৎ সরকার ও তবিবুর রহমান

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.