
নিজেদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন একদল ব্যক্তি। টানা ৩২ ঘণ্টা অবরোধের পর আজ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে আরেক দল ব্যক্তি নিজেদের ‘প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে ওই অবরোধকারীদের ওপর হামলা করেন। তাঁরা শাহবাগ মোড়ের চারপাশে রাখা ব্যারিকেড (প্রতিবন্ধকতা) সরিয়ে দেন।
এর এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। তখন পুলিশ এসে দুই পক্ষকে লাঠিচার্জ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এরপর শাহবাগ মোড় দিয়ে পুরোদমে যান চলাচল শুরু হয়েছে।

পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘জুলাই যোদ্ধা’ দাবি করে একদল লোক গতকাল সকাল থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছিলেন। তাঁদের দফায় দফায় বুঝিয়েও সড়ক থেকে সরানো যায়নি। আজ সন্ধ্যায় জুলাই যোদ্ধা দাবি করে অন্য একটি দল শাহবাগে আসে। দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি ও বিশৃঙ্খলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ দুই পক্ষকেই সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়েছে। এরপর শাহবাগ মোড়ে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

জুলাই শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের (আহত) ব্যানারে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করা হয়। এতে ঢাকার ব৵স্ততম এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সারা দিনের পর রাতেও সেখানে অবস্থান নিয়ে অবরোধ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। আজ সকালে বৃষ্টির মধ্যেও একদল আন্দোলনকারীকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখতে দেখা যায়।

অবশ্য সকালে আন্দোলনকারীরা কম থাকায় ফার্মগেট–বাংলামোটর হয়ে যাওয়া গাড়িগুলো শাহবাগ মোড় দিয়ে মৎস্য ভবনের দিকে যেতে পারছিল। আবার কাঁটাবন থেকে আসা গাড়িগুলো বাংলামোটরমুখী সড়কে আসতে পারলেও মৎস্য ভবনের দিকে যেতে পারছিল না। শাহবাগ মোড় হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কাঁটাবন অভিমুখী সড়কেও যান চলাচল বন্ধ ছিল।

শাহবাগে এই অবরোধ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল ‘জুলাই যোদ্ধা সংসদ’ নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠনের আহ্বায়ক আরমান শাফিন রাত ৯টার দিকে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেন, তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বহিরাগতরা অতর্কিত হামলা করেছে। হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশও ছিল। পুলিশ তাঁদের লাঠিচার্জ করেছে। এতে তাঁদের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রশ্নের জবাবে আরমান শাফিন বলেন, হামলাকারী বহিরাগত কারা সেটি তাঁরা জানেন না। তাঁরা আলোচনা করে এই হামলার প্রতিবাদে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।