হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নবনির্মিত তৃতীয় টার্মিনালে প্রথমবারের মতো একটি বিমান অবতরণ করেছে। নতুন এই টার্মিনাল ব্যবহার করে অবতরণকারী প্রথম ফ্লাইটটি ছিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার, যা সোমবার (৪ আগস্ট) সকালে রোম থেকে ফিরে টার্মিনাল-৩ এ অবতরণ করে।
নতুন টার্মিনালের যাত্রা শুরু হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে। ফ্লাইটটি প্যাসেঞ্জার বোর্ডিং ব্রিজ (পিবিবি) ও ভিজ্যুয়াল ডকিং গাইডেন্স সিস্টেম (ভিডিজিএস) ব্যবহার করে অবতরণ করে, যা টার্মিনাল ৩-এর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশনাল মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ফ্লাইটটি পরিচালনা করেন ক্যাপ্টেন ইশতিয়াক হোসেন এবং তাকে সহায়তা করেন ফার্স্ট অফিসার তাহসিন। এ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিমানবাহিনীর এয়ার কমোডর আবু সাঈদ মেহবুব খান।
অবতরণের পর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত বোর্ডিং ব্রিজে বাহ্যিক বিদ্যুৎ-সংযোগ, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, পানি সরবরাহসহ বিভিন্ন প্রযুক্তির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। এতে করে নতুন টার্মিনালের অপারেশনাল প্রস্তুতির বিষয়টি আরো একধাপ এগিয়ে গেল।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হয় এবং ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর নির্মাণকাজ শুরু হয়। প্রায় ২১ হাজার ৩৯৮ কোটি টাকার এই প্রকল্পে জাপানের উন্নয়ন সহযোগিতা সংস্থা জাইকা ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা ঋণ হিসেবে প্রদান করছে। বাকি অর্থের জোগান দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।
৩০ লাখ বর্গফুট এলাকাজুড়ে নির্মিত তিনতলা বিশিষ্ট এই টার্মিনালের আয়তন ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটার। ভবনটির দৈর্ঘ্য ৭০০ মিটার ও প্রস্থ ২০০ মিটার। টার্মিনালটির নকশা করেছেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন স্থপতি রোহানি বাহারিন, যিনি সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিপিজি কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেডের স্থপতি হিসেবে পরিচিত।
নতুন এই টার্মিনাল চালু হলে বাংলাদেশের বিমান চলাচল ও যাত্রীসেবা ব্যবস্থায় এক নতুন দিগন্তের সূচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।