শান্তিতে নোবেল পেল নিহন হিদাস্কিও

0
47
শান্তিতে নোবেল পেয়েছে জাপানের মানবাধিকার সংস্থা নিহন হিদানকিও
এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেলেন জাপানি সংস্থা নিহন হিডানকিও। বাংলাদেশ সময় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় নরওয়ের রাজধানী অসলো থেকে এ বছরের শান্তিতে নোবেল বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।

শান্তিতে নোবেল পেয়েছে জাপানের মানবাধিকার সংস্থা নিহন হিদানকিও। নোবেল পুরস্কার আসরের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরস্কার এটি।
 
স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টা ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টায় নরওয়ের রাজধানী অসলোর নোবেল ইনস্টিটিউট থেকে বিজয়ীর নাম ঘোষণা করা হয়।
 
পুরস্কারের ঘোষণা নেবেলপ্রাইজ ডট ওআরজি এবং ফেসবুক, এক্স, ইউটিউবে নোবেল পুরস্কারের অফিসিয়াল ডিজিটাল চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

 
হিরোশিমা এবং নাগাসাকি থেকে পারমাণবিক বোমা থেকে বেঁচে যাওয়া মানুষদের তৃণমূল পর্যায়ের আন্দোলনটি হিবাকুশা নামেও পরিচিত। পারমাণবিক অস্ত্রমুক্ত বিশ্ব অর্জনের প্রচেষ্টার বিশেষ অবদান রাখার পাশাপাশি বিচারকাজে সহায়তার জন্যে এই পুরস্কার অর্জন করে সংস্থাটি।
 
নোবেল কমিটির চেয়ারম্যান বেরিট রেইস-অ্যান্ডারসেন নাম ঘোষণার সময় বলেন, পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী বিশ্ব গড়ার প্রচেষ্টায় নিহন হিদানকিও’র অসাধারণ প্রচেষ্টা প্রশংসার যোগ্য।
 
নরওয়েজিয়ান নোবেল ইনস্টিটিউট এবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মোট ২৮৬ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম নিবন্ধন করেছিল। এর মধ্যে ১৯৭ জন ব্যক্তি। আর প্রতিষ্ঠান ৮৯টি।
 
শেষ দিকে তালিকায় আরও ছিলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিবেদিত জাতিসংঘের সংস্থা দ্য ইউনাইটেড নেশনস প্যালেস্টিনিয়ান রিফিউজি এজেন্সি (আনরোয়া) এবং জাতিসংঘের আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ড অব জাস্টিসকেও (আইসিজে)।
 
এর আগে মনে করা হয়েছিল এ পুরস্কারের জন্য মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জাতিসংঘ মহাসচিব এবং আইসিজের মধ্যে।
 
এবার শেষ পর্যায়ে এসে এ তালিকা থেকে দুইজনকে বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে একজন হচ্ছেন রাশিয়ার সাবেক বিরোধী নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি। অপর জন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দুজনেই শান্তিতে নোবেল পাওয়ার মনোনীতদের তালিকায় ছিলেন। অ্যালেক্সি নাভালনিকে বাতিল করার কারণ তিনি মারা গেছেন। আর জেলেনস্কি বাদ পড়েছেন এ কারণে যে তিনি একটি যুদ্ধরত দেশের প্রেসিডেন্ট।
 
প্রতিবছর শান্তি, সাহিত্য, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নশাস্ত্র ও অর্থনীতি—এই পাঁচ খাতে বিশেষ অবদান রাখা ব্যক্তিদের দেওয়া বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার নোবেল। শান্তি ছাড়া বাকি চারটি খাতে পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন এবং প্রদান করে থাকে সুইডিশ রয়্যাল একাডেমি। আর শান্তিতে নোবেলের প্রার্থী মনোনয়ন ও পুরস্কার দেয় নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি।
 
এর আগে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দে শান্তিতে নোবেল পেয়েছিলেন ইরানের নার্গিস মোহাম্মাদি । ইরানি নারীদের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই ও সবার জন্য মানবাধিকার ও স্বাধীনতার প্রচারের জন্য তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়।
 
২০২২ খ্রিস্টাব্দে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান বেলারুশের মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী আলেস বিলিয়াতস্কি, রুশ মানবাধিকার সংস্থা মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনীয় মানবাধিকার সংস্থা সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিজ।
 
২০২১ খ্রিস্টাব্দে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ফিলিপাইনের সাংবাদিক মারিয়া রেসা এবং রাশিয়ার সাংবাদিক দিমিত্রি মুরাতভ। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার জন্য দুঃসাহসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।
 
এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি তিনবার শান্তিতে নোবেল পেয়েছে রেড ক্রস (১৯১৭, ১৯৪৪ ও ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দে)। এছাড়া জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর পেয়েছে দু’বার (১৯৫৪ ও ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে)।
 
এ বছরের নোবেলজয়ীরা পাচ্ছেন একটি নোবেল মেডেল, একটি সনদপত্র এবং ১ কোটি ১০ লাখ সুইডিশ ক্রোনা। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর অর্থমূল্য প্রায় ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। যেসব বিভাগে একাধিক নোবেলজয়ী থাকছেন, তাদের মধ্যে এই অর্থ সমান ভাগে ভাগ করে দেওয়া হচ্ছে।
 
আগামী ১০ ডিসেম্বর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুদিবসে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.