শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিতে ছুটতে সক্ষম (সুপারসনিক) যুদ্ধবিমান আছে। কিন্তু যাত্রী নিয়ে শব্দের চেয়ে দ্রুত ছুটতে সক্ষম উড়োজাহাজ নেই। দীর্ঘদিন এ নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। সংস্থাটির দাবি, সুপারসনিক উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহনের দ্বারপ্রান্তে তারা।
নাসা জানিয়েছে, সম্প্রতি যাত্রী নিয়ে সুপারসনিক উড়োজাহাজ পরীক্ষামূলক চলাচল করেছে। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করছে তারা। পরীক্ষামূলক চলাচল সফল হলে নিউইয়র্ক থেকে লন্ডন যেতে সময় লাগবে মাত্র দেড় ঘণ্টা। এখন এ পথে ভ্রমণে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা সময় লাগে।
যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের গতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০০ মাইল (শব্দের ৮০ ভাগ) পর্যন্ত হয়। তবে নাসা যে উড়োজাহাজে যাত্রী পরিবহনের পরিকল্পনা করছে, তার গতি হবে ঘণ্টায় ১ হাজার ৫৩৫ থেকে ৩ হাজার ৪৫ মাইল। এতে বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ চলাচলে ‘যুগান্তকারী’ পরিবর্তন আসবে।
নাসার কমার্শিয়াল সুপারসনিক টেকনোলজি প্রকল্পের পরিচালক লোরি ওজোরস্কি বলেন, ‘একই ধারণা থেকে এক যুগ আগেও আমরা গবেষণা চালিয়েছি। আগের সেসব গবেষণাও আমাদের কাজে লেগেছে। একই সঙ্গে দ্রুতগতির বাণিজ্যিক ফ্লাইট নিয়ে নতুন গবেষণার পথ খুলে দিয়েছে।’
দ্রুতগতির ফ্লাইট পরিচালনার জন্য এক্স-৫৯ নামে একটি সুপারসনিক উড়োজাহাজ নির্মাণ করছে নাসা। উড়োজাহাজ ও অস্ত্র নির্মাতা মার্কিন প্রতিষ্ঠান লকহিড মার্টিন নাসার জন্য এই উড়োজাহাজ তৈরি করেছে। এর অন্যতম বৈশিষ্ট্য, অন্য সুপারসনিক উড়োজাহাজের চেয়ে শব্দ কম।
বিষয়টি নিয়ে এখন পরবর্তী ধাপের গবেষণা চালাচ্ছে নাসার দ্য অ্যাডভান্সড এয়ার ভেহিকল প্রোগ্রাম। ধারণার উন্নয়ন ও প্রযুক্তিগত বিষয়গুলো নিয়ে পরিকল্পনায় এক বছর মেয়াদি দুটি চুক্তি করছে। এর আওতায় সম্ভাব্য ঝুঁকি ও সমস্যা এবং খুঁটিনাটি প্রযুক্তিগত বিষয় খতিয়ে দেখবে নাসা।
নাসার হাইপারসনিক টেকনোলজি প্রকল্পের পরিচালক ম্যারি জো উড়োজাহাজের নকশা নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নাসার দুটি চুক্তির ওপর গুরুত্বারোপ করলেন। তিনি বলেন, দ্রুতগতির ফ্লাইট পরিচালনা নিয়ে সম্ভাব্য ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ বুঝতে যৌথভাবে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা দরকার।
সুপারসনিক উড়োজাহাজে বাণিজ্যিক চলাচলের অর্থনৈতিক সম্ভাব্যতা যাচাই করে দেখছে নাসার গ্লেন রিসার্চ সেন্টার। তারা বলছে, সম্ভাব্য অর্ধশত পথে সুপারসনিক উড়োজাহাজ যাত্রী পরিবহন করতে পারবে। এসব পথ হবে মূলত আটলান্টিক অথবা প্রশান্ত মহাসাগরের এপার থেকে ওপারে।