শক্তিশালী শ্রম আইন ও এর বাস্তায়ন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। সেই সঙ্গে বাংলাদেশে গার্মেন্টসের টেকসই ও প্রবৃদ্ধির জন্য শ্রম অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ তুলা দিবস ২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
পিটার হাস বলেন, ‘শক্তিশালী শ্রম আইন ও এর বাস্তবায়ন আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত মার্কিন প্রতিষ্ঠাগুলোর একটি স্থিতিশীল ও অনুমানযোগ্য পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি সময়ে তৈরি পোশাক শিল্পের জন্য নূন্যতম মজুরি পর্যালোচনায় পরিষ্কার হয়েছে যে গার্মেন্টস শ্রমিকদের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় একটি বস্তুনিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রমাণভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতি বাংলাদেশে প্রয়োজন।’
পিটার হাস আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গার্মেন্টসখাত ও এর বাইরের খাতগুলোতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকার প্রতিষ্ঠায় বেসরকারিখাতসহ অন্যান্য খাত সংশ্লিষ্ট সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। তৈরি পোশাক শিল্পে শ্রম মান উন্নয়নের মাধ্যমে একটি টেকসই ও সবার জন্য সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমাদের একটি লক্ষ্য।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিকভাবে শ্রম মান উন্নয়নে গত ১৬ নভেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিংকেন মার্কিন নতুন বৈশ্বিক শ্রম কৌশল ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন ও দরকষাকষির উন্নয়ন ও সুরক্ষায় বিভিন্ন দেশের সরকার, শ্রম সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন, নাগরিক সমাজ এবং বেসরকারিখাতের সঙ্গে যোগাযোগ গভীর করার সুযোগ বাড়িয়েছে।’
বাংলাদেশকে মার্কিন তুলার অন্যতম বাজার জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মার্কিন তুলা বাংলাদেশে প্রবেশের পূর্বে পরীক্ষা–নিরীক্ষার যে বিধান ছিল, তা চলতি বছরে তুলে নেওয়া হয়েছে। আর এটি ২০২৩ সালে ঢাকার মার্কিন দূতাবাসের সবচেয়ে বড় অর্জন। আর এটি শুধু যুক্তরাষ্ট্রের নয়, বাংলাদেশেরও অর্জন। কারণ এর মাধ্যমে মার্কিন তুলা আরও দ্রুততম সময়ে কম খরচে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারছে।’
পিটার হাস বলেন, ‘২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্র মোট ৪৭ কোটি ডলারের তুলা রপ্তানি করে। আর এ রপ্তানির ১৫ শতাংশের ক্রেতা বাংলাদেশ। যদিও বিভিন্ন কারণে চলতি বছর বাংলাদেশে মার্কিন তুলার রপ্তানি কমেছে। তবে মার্কিন তুলার চাহিদা বাংলাদেশে রয়েছে। বাংলাদেশে মার্কিন তুলার চাহিদা বাড়ার অন্যমত কারণ হচ্ছে এখানে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ মানসম্পন্ন তুলার বিষয়ে সচেতনতা বেড়েছে।’
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে তৈরি পোশাক শিল্প ও শ্রমিকদের জন্য কী করা হচ্ছে তা মার্কিন প্রশাসনকে জানাতে অনুরোধ করেন