লেবাননের রাজধানী বৈরুতের মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর মুখপাত্র মোহাম্মদ আফিফ নিহত হয়েছেন। লেবাননের একটি নিরাপত্তা সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে সূত্রটি জানায়, রাস আল–নাব্বা এলাকায় চালানো হামলায় লেবাননভিত্তিক সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম সংযোগ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আফিফ নিহত হন। যে ভবনে হামলা চালানো হয়েছিল, সেটি ছিল সিরিয়ান বাথ পার্টির লেবানন শাখার কার্যালয়।লেবাননের সরকারি বার্তা সংস্থা ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সির (এনএনএ) খবরে বলা হয়, বাথ পার্টির লেবানন শাখার সেক্রিটারি জেনারেল আলি হিজাজি হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম কর্মকর্তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এ হামলায় একজন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন নিখোঁজ আছেন। ঘটনাস্থল থেকে ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে ঘিরে থাকা সংগঠনটির দীর্ঘদিনের অভ্যন্তরীণ বলয়ের একজন ছিলেন আফিফ। বেশ কয়েক বছর ধরে আফিফ হিজবুল্লাহর গণমাধ্যম সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন। প্রায়ই নাম না প্রকাশ করে তিনি স্থানীয় ও বিদেশি সাংবাদিকদের তথ্য সরবরাহ করতেন।
‘ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি জানায়, রাস আল-নাব্বা এলাকায় ‘শত্রুপক্ষ বিমান’ হামলা করে ‘মহা ধ্বংসযজ্ঞ’ চালিয়েছে। এতে বেশ কিছু মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে। রাস আল-নাব্বা এলাকাটি ফ্রান্স দূতাবাস ও একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে।
খবরে বলা হয়, পাশের একটি ভবনের এক বাসিন্দা বলেন, হামলার আগে তাদের সরে যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তারা বিষয়টিতে গুরুত্ব দেননি।
আফিফ অল্প বয়সে হিজবুল্লাহতে যোগ দেন। ২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েল যখন যুদ্ধে লিপ্ত হয়, তখন প্রথম হিজবুল্লাহর টেলিভিশন চ্যানেল আল-মানারের তথ্য পরিচালক হিসেবে পরিচিতি পান আফিফ।
গত সেপ্টেম্বরে ইসরায়েলি হামলায় নাসরুল্লাহ নিহত হন। নাসরুল্লাহ নিহত হওয়ার পর বেশ কয়েকটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। গত মাসের এক সংবাদ সম্মেলনে আফিফ জানিয়েছিলেন যে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাসভবনে হিজবুল্লাহর ড্র্রোন হামলা চালানো হয়েছে। তবে সেই সংবাদ সম্মেলন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছিল, কারণ ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সতর্ক করেছিল, তারা নিকটবর্তী একটি ভবনে হামলা চালাবে।
সাংবাদিকেরা তখন টেবিল থেকে দ্রুত নিজেদের মাইক্রোফোনগুলো তুলে নিতে শুরু করলে আফিফ বলেছিলেন, ‘বোমা হামলা করে আমাদের ভয় দেখাতে পারবে না, তাহলে কিসের হুমকি?’