অ্যানফিল্ডে ৫ গোল
ফুটবল বিশ্বে যেসব মাঠকে প্রতিপক্ষের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং মনে করা হয়, অ্যানফিল্ড তার অন্যতম। ঘরের মাঠে লিভারপুল বরাবরই অপ্রতিরোধ্য। অথচ সেই লিভারপুলকে কাল নিজেদের দুর্গেই উড়িয়ে দিল রিয়াল মাদ্রিদ। এর মধ্য দিয়ে নতুন এক মাইলফলকও গড়েছে রিয়াল। যে মাঠে কোনো ইউরোপিয়ান দল আগে কখনো ৪ গোলও দিতে পারেনি, সেখানে কাল রিয়াল গোল করল ৫টি। অবিশ্বাস্যই বটে! এ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ৪ বা তার বেশি গোল হজম করল লিভারপুল। এর আগে গ্রুপ পর্বে ৪ গোল হজম করেছিল নাপোলির মাঠে।
বেনজেমার ৬ গোল
ইউরোপিয়ান কাপ এবং চ্যাম্পিয়নস লিগের ইতিহাসে লিভারপুলের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি গোল করা খেলোয়াড় এখন করিম বেনজেমা। গতকাল জোড়া গোল করার পর ‘অল রেড’দের বিপক্ষে তাঁর গোলসংখ্যা এখন ৬। যেখানে লিভারপুলের মাঠ অ্যানফিল্ডেই অতিথি খেলোয়াড় হিসেবে সর্বোচ্চ ৪ গোল করেছেন বেনজেমা। বেনজেমার সঙ্গে অবশ্য লড়াইয়ে আছেন তাঁর সতীর্থ ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও, যিনি লিভারপুলের বিপক্ষে এখন পর্যন্ত করেছেন ৫ গোল।
ক্রুইফের পর ভিনিসিয়ুস
গত মৌসুমের ফাইনালে গোল করে লিভারপুলের হৃদয় ভেঙেছিলেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। গতকাল রাতেও লিভারপুলকে অনেকটা একাই ডুবিয়েছেন ভিনি। তাঁর জোড়া গোলই মূলত গড়ে দেয় ম্যাচের পার্থক্য। জোড়া গোলে অবশ্য দারুণ এক মাইলফলকও স্পর্শ করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার। ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মঞ্চে ডাচ কিংবদন্তি ইউহান ক্রুইফের পর সবচেয়ে কম বয়সী অতিথি খেলোয়াড় হিসেবে অ্যানফিল্ডে জোড়া গোল করেছেন ভিনিসিয়ুস।
মেসিকে ছুঁলেন বেনজেমা
গত মৌসুমে অবিশ্বাস্য ছন্দে ছিলেন বেনজেমা। এবার অবশ্য মৌসুমের শুরু থেকে লড়তে হয়েছে চোটের সঙ্গে। যে কারণে গ্রুপ পর্বের বেশির ভাগ ম্যাচে খেলা হয়নি তাঁর। তবে নকআউট পর্বের শুরুতেই যেন ফিরে পাওয়া গেল সেই পুরোনো বেনজেমাকে। লিভারপুলকে উড়িয়ে দেওয়ার পথে জোড়া গোল করেছেন বেনজেমা। আর এ ম্যাচে গোল করে একটি রেকর্ডে লিওনেল মেসিকে ছুঁয়েছেন ফরাসি স্ট্রাইকার। এই দুজন খেলোয়াড় টানা ১৮টি চ্যাম্পিয়নস লিগ আসরে গোল করার কীর্তি গড়েছেন।
২ গোলে পিছিয়ে তিন গোলে জয়
গত মৌসুমে একের পর এক ম্যাচে ঘুরে দাঁড়িয়ে জয় পেয়েছে রিয়াল। সাম্প্রতিক সময়ে ‘কামব্যাক কিং’ বিশেষণটাও তাদের নামের সঙ্গে জড়িয়েছে। আর এবার তো রীতিমতো মাইলফলকই গড়ল দলটি। প্রথম দল হিসেবে অন্তত ২ গোলে পিছিয়ে থাকার পর ৩ গোলের ব্যবধানে জিতল রিয়াল। এ ম্যাচে ২১ থেকে ৬৭ মিনিটের মধ্যে ৫ গোল আদায় করেছে দলটি। অর্থাৎ প্রতি ৯ মিনিটে একটি করে গোল করে তারা।
ভিনির আরেক কীর্তি
লিভারপুলের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে থাকার পর জোড়া গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান ভিনি। তবে প্রথম গোলটি করেই আরেকটি দারুণ মাইলফলক স্পর্শ করেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। মাদ্রিদের দ্বিতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে গোল করার কীর্তি গড়েছেন ভিনি। এর আগে সেল্টিক ও আরবি লাইপজিগের বিপক্ষেও গোল করেছিলেন এই ফরোয়ার্ড। তবে সবচেয়ে কম বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে গোল করার কীর্তিটা এখনো আছে রাউল গঞ্জালেসের দখলে। ১৯৯৯ সালে ২২ বছর ১৬৩ দিন বয়সে টানা তিন চ্যাম্পিয়নস লিগ ম্যাচে গোল করার কীর্তি গড়েছিলেন স্প্যানিশ কিংবদন্তি রাউল।