র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁর ভূমি অফিসের কর্মচারী সুলতানা জেসমিনের (৪০) ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়েছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগ থেকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, যে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে, তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয়। মৃত্যুর কারণে হিসেবে দুর্বল রক্তনালি ফেটে রক্তক্ষরণের কথা বলা হয়েছে।
জেসমিনের মৃত্যুর পর গত ২৫ মার্চ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে তিন সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড মরদেহের ময়নাতদন্ত করে। এই বোর্ডের প্রধান ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কফিল উদ্দিন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ কী এসেছে, সেটা তিনি সরাসরি গণমাধ্যমকে বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুবাস চন্দ্র বর্মন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন। তবে প্রতিবেদনের তথ্য জানার জন্য তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। মুখপাত্র রফিকুল আলম আজ সোমবার দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁকে কোনো ডকুমেন্ট দেওয়া হয়নি। কথা বলার জন্য কয়েক ছত্রের একটি তথ্য দেওয়া হয়। সেটি তিনি এখনো পাননি।
পরিবারের দাবি নির্দোষ, র্যাব বলছে ‘প্রতারক’
তবে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে সুলতানা জেসমিনের মাথার ভেতরে রক্তনালি ফেটে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে মাথার যে আঘাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তা মৃত্যুর জন্য যথেষ্ট নয়।
র্যাব-৫-এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল ২২ মার্চ সকালে জেসমিনকে আটক করে। স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে নিয়েই র্যাব এই অভিযান চালায়। এনামুল হকের অভিযোগ, জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর (এনামুল) ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্নজনকে। এভাবে তাঁরা প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন।
র্যাব হেফাজতে নারীর মৃত্যু: ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনসহ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র দেখতে চান হাইকোর্ট
এদিকে আটকের পরের দিন ২৪ মার্চ সকালে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জেসমিন মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হকের করা একটি মামলার কথা জানা যায়, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেল। জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী আল-আমিনকে এতে আসামি করা হয়। আল-আমিনকে ২৬ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তিনি একজন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট।