রোহিঙ্গাদের পাইলট প্রত্যাবাসন প্রকল্পে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সমর্থন চেয়েছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবারে নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশ এ সমর্থন চায়। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গাদের নিয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত বলেন, আমরা জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং আঞ্চলিক দেশগুলিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য নেওয়া পাইলট প্রকল্পকে সমর্থন করতে এবং এ প্রকল্পের আওতায় প্রত্যাবাসিত রোহিঙ্গাদেরকে মিয়ানমারে পুনরায় ফিরে যেতে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানাই। উভয় পক্ষ রোহিঙ্গাদেরকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রকল্পের অধীনে একদল রোহিঙ্গা প্রথম ব্যাচে মিয়ানমারে ফিরে যাবে এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্যদের প্রত্যাবাসন করা হবে।
নিরাপত্তা পরিষদকে তিনি বলেন, গত ৫ মে ২০ জন রোহিঙ্গার একটি দল মিয়ানমারের রাখাইনে যায় এবং সেখানে তাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমারের নেওয়া ব্যবস্থাগুলো পরিদর্শন করেন।
পাইলট প্রকল্পটিকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, এর আওতায় রোহিঙ্গাদেরকে পারিবারিক ইউনিটে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সব ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে। তবে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত যাওয়ার পর আবার যেন তারা সেখানে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের নিপীড়নের সম্মুখীন না হয়, সেজন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিশ্বাস তৈরির পদক্ষেপের অংশ হিসেবে মানবিক ও উন্নয়ন অংশীদারদের উপস্থিতি একান্তভাবে কাম্য। এ লক্ষ্যে আমরা আঞ্চলিক সদস্য দেশগুলিকেও রোহিঙ্গাদেরকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে সহায়তা করার আহ্বান জানাই।
বৈঠকে নিরাপত্তা পরিষদের সব সদস্য এবং আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ অংশগ্রহণ করে। সভায় উপস্থিত সদস্যরা, অন্যান্যদের মধ্যে, ঘূর্ণিঝড় মোকা পরবর্তী সময়ে মিয়ানমারের বর্তমান মানবিক চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেন। তারা মিয়ানমারের বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আসিয়ানের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ, স্বেচ্ছায়, টেকসই এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং রাখাইনের অবস্থার উন্নতির জন্য মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।