রিজার্ভ আবার ৩১ বিলিয়ন ছাড়াল

0
136
ডলার

ঈদের মাসে চাঙ্গাভাব ফিরেছে প্রবাসী আয়ে। চলতি মাসের ২৫ দিনে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ২০২ কোটি ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। আগের বছরের একই মাসের তুলনায় যা প্রায় ৫৮ শতাংশ বেশি। এপ্রিল ও মে মাসের তুলনায়ও রেমিট্যান্সের এ পরিমাণ অনেক বেশি। রেমিট্যান্সে চাঙ্গাভাবের মধ্যে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের ৫২ কোটি ডলারও সোমবার রিজার্ভে যোগ হয়েছে। সব মিলিয়ে আজ দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে আবার ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। মাঝে যা ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমেছিল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় বাড়াতে থেমে থেমে ডলারের দর বাড়াচ্ছে ব্যাংকগুলো। বর্তমানে রেমিট্যান্সে ডলারের দর ১০৮ টাকা ৫০ পয়সা দেওয়া হচ্ছে। আজ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাফেদা ও বিভিন্ন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি রপ্তানি বিল কেনার দর ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা করেছে। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল কেনার গড় দরের সঙ্গে সর্বোচ্চ এক টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রির সিদ্ধান্ত বহাল রয়েছে। এখন থেকে কোনো ব্যাংক ডলারে ১০৯ টাকার বেশি দর নিতে পারবে না বলে জানিয়েছে। এছাড়া আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ডলার কেনা ও বিক্রির একক দর বা সিঙ্গেল রেট কার্যকরের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। যদিও এর আগে ১ জুলাই থেকে একক দর কার্যকরের কথা বলা হয়েছিল।

ডলারের দর হুহু করে বাড়তে থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় গত সেপ্টেম্বর থেকে ব্যাংকগুলো কেনা ও বিক্রির সর্বোচ্চ দর ঠিক করে দিচ্ছে। যদিও অনেক ব্যাংক নির্ধারিত দরের বেশিতে ডলার কিনছে। এ বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে কয়েক দফা সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সর্বশেষ গত ২১ মে বিএফআইইউ ৭টি ব্যাংকের রেমিট্যান্স-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে নিয়ে বৈঠক করে। এরপরও এখনও অনেক ব্যাংক নির্ধারিত দর মানছে না। কোনো কোনো ব্যাংক প্রবাসীদের পাঠানো ডলার কিনতে ১১৩ টাকা পর্যন্ত দর দিচ্ছে বলে জানা গেছে।

ব্যাংক সূত্র বলছে, ঈদ ও রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় এমনিতেই বাড়ে। তবে গত ঈদুল ফিতরের আগে এপ্রিল মাসে মাত্র ১৬৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। মে মাসে আসে ১৬৯ কোটি ডলার। অথচ আগের বছরের এপ্রিলে যেখানে ২০২ কোটি এবং মে মাসে ১৮৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত ২ হাজার ১৪৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। গত অর্থবছরের পুরো সময়ে এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ এ বছর রেমিট্যান্স বেড়েছে ৪০ কোটি ডলার বা ১.৯০ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেকর্ড বিক্রি: বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাজারে সংকট কাটাতে চলতি অর্থবছর বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে রেকর্ড ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ঈদের আগে আজ শেষ কর্মদিবসে বিক্রি করা হয় ৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার। এ নিয়ে চলতি অর্থবছরে মোট বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৩৫৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছর বিক্রির পরিমাণ ছিল ৭৬২ কোটি ডলার; যা ছিল ওই পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এভাবে ডলার বিক্রির ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমে ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নামে।

গত ১৫ জুন রিজার্ভ ছিল ২৯.৮৩ বিলিয়ন ডলার। তবে আজ তা আবার বেড়ে ৩১.১৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে। দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। তবে কমতে কমতে গত ৮ মে তা ৩০ বিলিয়নের নিচে নামে। আজ এডিবির বাজেট সহায়তার ৪০ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংক থেকে পাওয়া গেছে ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সম্প্রতি আরও কিছু ঋণ পাওয়ায় রিজার্ভ এভাবে বেড়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.