রাশিয়ায় হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রবিজ্ঞানীর বিচার শুরু

0
301
রাশিয়ার খ্যাতনামা বিজ্ঞানী আনাতোলি মাসলভ, ছবি: টুইটার থেকে নেওয়া

আনাতোলি মাসলভ রাশিয়ার একজন খ্যাতনামা বিজ্ঞানী। দেশটির হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার মাসলভের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রদ্রোহের’ আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু করেছে রাশিয়া। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ কাজে যুক্ত ছিলেন।

মাসলভ কাজ করতেন রাশিয়ার সাইবেরিয়ার নভোসিব্রিস্ক শহরের একটি ইনস্টিটিউটে। সেখানকার তিনজন বিজ্ঞানীর বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ কার্যক্রমে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনেছে ক্রেমলিন। তাঁদেরই একজন মাসলভ। অন্য দুজন হলেন ভ্যালেরি জাভেগিন্তশেভ ও আলেক্সান্দার শিপলিউক।

স্থানীয় সময় গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গের আদালতে মাসলভের বিচার শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত তিন বিজ্ঞানীর মধ্যে সবার আগে মাসলভের বিচার শুরু হলো। ক্রেমলিন জানিয়েছে, এ তিনজনের বিরুদ্ধে ‘গুরুতর অভিযোগ’ রয়েছে।

গোপন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে মাসলভের বিচার করা হচ্ছে। বিচারপ্রক্রিয়া–সংক্রান্ত কোনো তথ্য সংবাদমাধ্যমে কিংবা প্রকাশ্যে জানানো হয়নি। বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে কথা বলার জন্য মাসলভের আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

বিজ্ঞানী মাসলভের বয়স ৭৬ বছর। গত বছরের জুনে তাঁকে নভোসিব্রিস্ক থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, মাসলভ গুরুতর অসুস্থ। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি দুবার হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দীর্ঘ সময় তাঁকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছে।

ওই সূত্রের অভিযোগ, বিচার–পূর্ববর্তী আটকাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে মাসলভকে প্রয়োজনীয় ওষুধ খেতে দেওয়া হয়নি। তাই মাসলভের শারীরিক অবস্থা গুরুতর পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। যদিও রয়টার্সের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

মাসলভ রাশিয়ার ক্রিস্টিয়ানোভিচ ইনস্টিটিউট অব থিওরেটিক্যাল অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড মেকানিকসের অধ্যাপক ও গবেষক ছিলেন। এটা রাশিয়ার অন্যতম শীর্ষ বৈজ্ঞানিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত।

অভিযুক্ত তিনজনই হাইপারসনিক বিশেষজ্ঞ। রাশিয়ার পরবর্তী প্রজন্মের ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়নে হাইপারসনিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়েও ১০ গুণ গতিতে ছুটতে সক্ষম।

গত ১৫ মে মাসলভসহ অভিযুক্ত তিন বিজ্ঞানীর সহকর্মীরা একটি খোলাচিঠি লিখেছেন। এতে তাঁরা আটক সহকর্মীদের প্রতি নিজেদের সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, ওই তিনজন দেশপ্রেমিক ও নির্দোষ। রাশিয়ায় বিজ্ঞানের বিকাশে তাঁরা নিজেদের সেরাটা দিয়েছেন। এমনকি বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরির সুযোগ পেছনে ফেলে তাঁরা দেশের উন্নয়নে রয়ে গেছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.