জাতীয় পার্টির (জাপা) সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, জীবনকে রাতারাতি বদলে দেওয়ার একমাত্র পন্থা হচ্ছে রাজনীতি। এখন এটা পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আগে রাজনীতি নেশা ছিল। মানুষ জীবন বাজি রেখে রাজনীতি করত। এখন সেই নেশা নেই। এটা সবচেয়ে বড় পেশা।
জাতীয় সংসদের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সংসদের বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে আজ রোববার এসব কথা বলেন কাজী ফিরোজ রশীদ। সুবর্ণজয়ন্তীতে আলোচনার জন্য গত শুক্রবার সংসদে একটি প্রস্তাব আনেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রস্তাবের ওপর সংসদ সদস্যরা আলোচনায় অংশ নিচ্ছেন।
কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘পাকিস্তান আমলে দেখা যেত, পাত্র যদি রাজনীতি করে, তাহলে (পাত্রীপক্ষ) বিয়ে দিত না। কারণ, সে (পাত্র) কোনো চাকরি পাবে না, তাহলে সে খাওয়াবে কী? খাওয়াতে হলে পত্রিকা অফিসে চাকরি করতে হবে, না হলে বটতলার উকিল হতে হবে, না হয় মুদিদোকানদার হতে হবে অথবা এজেবির কেরানিগিরি। কার কাছে মেয়ে দেবে? কিন্তু এখন যদি শোনে পাত্র সরকারি দল করে, তাহলে বলে, আলহামদুলিল্লাহ। এর চেয়ে ভালো পাত্র আর হবে না। কারণ, সে কিছু করতে পারবে।’
বর্তমান সরকারের আমলে বিএনপির ব্যবসায়ীরা সবচেয়ে বেশি ব্যবসা পেয়েছেন বলে দাবি করেন জাপার এই সংসদ সদস্য। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ব্যবসা নেয়। আর পিছে থাকে বিএনপি।
সংসদের অনেক অর্জনের সঙ্গে দুর্বলতাও আছে বলে মন্তব্য করেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনার নেপথ্যে কারা জড়িত, তা বের করতে এখনো কমিশন হয়নি।
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনার বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি নতুন আইন করার প্রস্তাব দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, সংসদ অকার্যকর করার জন্য গত দুটি নির্বাচন তারা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছিল। তারা শুধু ষড়যন্ত্রই করছে না, দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে। মিথ্যাচার, ইতিহাস বিকৃতি, স্বাধীনতার বিরুদ্ধাচরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ না থাকলে রাষ্ট্র হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে মনে করেন তিনি।
সরকারি দলের জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমার আক্ষেপ, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে দেশে কোনো প্রতিবাদ হয়নি। আমরা অঝরে কেঁদেছি। আমাদের হাতে কিছুই ছিল না। কিছুই করতে পারিনি। আমরা মুক্তিযোদ্ধা, আমাদের হাতিয়ার ছিল না, কিছুই ছিল না।’