রাঙামাটিতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার, খুলবে দোকানপাট

0
14
১৪৪ ধারা প্রত্যাহারের পর রাঙামাটি শহরের বনরূপা এলাকায় সেনা সদস্যদের সতর্ক প্রহরা

রাঙামাটিতে দুই দিন পর আজ রোববার বেলা ১১টায় ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে। পাহাড়ি–বাঙালি সংঘর্ষের জেরে গত শুক্রবার বেলা ১টার দিকে পৌরসভায় এই বিধিনিষেধ জারি করেছিল জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক মোহামদ মোশারফ হোসেন খান আজ বলেন, ‘বেলা ১১টা থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি আগের চেয়ে স্বাভাবিক। ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়ার মাইকিং করা হবে। ধীরে ধীরে দোকানপাট খুলে যাবে।’

তবে ঘটনার প্রতিবাদে ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধ চলায় জেলা শহরে এখনো যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। অবরোধের আজ দ্বিতীয় দিন। শুক্রবার ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে এই অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।

উল্লেখ্য, গত বুধবার খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্রে করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবকের মৃত্যুর পর সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই দিন সেখানকার পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বাঙালিদের অভিযোগ, মিছিলটি বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে বিভিন্ন দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, আগুনে দীঘিনালা বাসস্টেশন ও লারমা স্কয়ার এলাকায় ১০২টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে পাহাড়িদের ৭৮টি ও বাঙালির সম্প্রদায়ের ২৪টি দোকান রয়েছে।

দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)।

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল। গত শুক্রবার সকালে কালিন্দপুর এলাকায়
খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ঘটনার প্রতিবাদে রাঙামাটিতে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল। গত শুক্রবার সকালে কালিন্দপুর এলাকায়

খাগড়াছড়িতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন পাহাড়িরা। মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ ৩০ থেকে ৪০টি বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অন্তত ৩০টি যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে ১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন দুই পক্ষের অন্তত ৬০ জন। নিহত ব্যক্তির নাম অনীক কুমার চাকমা। তিনি কর্ণফুলী ডিগ্রি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার দুপুরে দুই জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। শুক্রবার রাত ৯টায় খাগড়াছড়ির ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়। রাঙামাটিতে তা বলবৎ ছিল। আজ রাঙামাটিতেও ১৪৪ ধারা তুলে দেওয়া হলো।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.