বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজরিত কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহের পরিত্যক্ত কাছারিবাড়ির সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, খুলনা আঞ্চলিক কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে আজ বুধবার সংস্কার কাজ শুরু হয়।
চলতি অর্থবছরে বাড়িটির এক-চতুর্থাংশ সংস্কার করা হবে। সংস্কার শেষে বাড়িটি দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্যকর্মের প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হবে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১৮৯১ সালে বাবার আদেশে কোলকাতা থেকে জমিদারি তদারকির কাজে শিলাইদহে আসেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সেখানে প্রায় ৫ একর জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ করে তিনি খাজনা আদায়ের কাজ করতেন। জমিদারির ফাঁকে তিনি শিলাইদহে অসংখ্য গান, কবিতা বা নাটক লিখেছেন। এই অঞ্চলে তখন কৃষির বিপ্লব হয়। তিনি গড়ে তুলেছিলেন সমবায় সমিতি, সমবায় ব্যাংক।
আজ বাড়িটিতে গিয়ে দেখা যায়, অপূর্ব কারুকাজ সমৃদ্ধ দোতলা বাড়িটি আগাছা আর বন্য লতা-গুল্মে ছেয়ে গেছে। দরজা-জানালা নেই। খসে পড়েছে পলেস্তারা। ভেঙে পড়েছে এক কক্ষের ছাদ। বাড়ির দেওয়াল ও দোতলার মেঝেতে ঘুটে শুকানো (কাঁচা গোবর) হয়। কয়েকজন শ্রমিক সংস্কারের কাজ করছেন।
সাবেক ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলাম জানান, তাঁর দাদা ও নানা কাছারিবাড়িতে ঘোড়ায় চড়ে খাজনা আদায়ের কাজ করছেন। কালের সাক্ষী বাড়িটি প্রায় ৬০-৭০ বছর পরিত্যক্ত হয়ে আছে। অনেক দর্শনার্থী এসে ফিরে যান। আরও আগেই সংস্কার করার দরকার ছিল।
ঠিকাদার হুমায়ন আহমেদ জানান, প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনি সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। শুধু ভবনের পরিত্যক্ত ইট, কাঠ, লোহাগুলো পরিবর্তন করবেন তিনি। চলতি বছরের জুনের মধ্যে সংস্কার কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান আল আমিন বলেন, ২০১৮ সালে কাছারিবাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কাছে হস্তাস্তর করা হয়। প্রথমবারের মতো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। তবে পুরো ভবন নয়, শুধুমাত্র পরিত্যক্ত ইট, কাঠ, লোহা গুলোর সংস্কার করা হবে। চলতি অর্থবছরে বাড়ির চার ভাগের এক সংস্কার করা হবে। বরাদ্দ পেলে আগামী দুই-তিন অর্থবছরের পুরো বাড়ির সংস্কার কাজ করা হবে।