মরে যাওয়া মানে কি সবকিছুর শেষ। এ নিয়ে বিভিন্ন ধর্মে ভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। এর উত্তর খুঁজে পেতে চলছে বৈজ্ঞানিক গবেষণাও। এ নিয়ে বিশদ গবেষণার পর নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসক ও গবেষক জেফরি লং। তিনি বলেছেন, মৃত্যুর পরও জীবন আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।
জেফরি যুক্তরাষ্ট্রের কেনটাকি রাজ্যের একজন খ্যাতনামা ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ। মৃত্যু নিয়েও তিনি বহুদিন ধরে গবেষণা করছেন। ‘নিয়ার-ডেথ এক্সপেরিয়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানও গড়ে তুলেছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নিয়ার-ডেথ এক্সপেরিয়েন্স বা মৃত্যুর কাছাকাছি অবস্থায় যাওয়ার অভিজ্ঞতার প্রায় ৫ হাজার ২০০ কেস স্টাডি করেছেন তিনি। মৃত্যুর কাছ থেকে ফিরে আসা প্রত্যেক ব্যক্তির গল্প শুনেছেন এবং সেগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে বিশ্লেষণ করেছেন তিনি।
জেফরি বলেছেন, ‘প্রায় ৩৭ বছর ধরে আমি ৫ হাজারেরও বেশি নিয়ার-ডেথ এক্সপেরিয়েন্সের ঘটনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি।’
তিনি বলেন, মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছা প্রতিটি ব্যক্তির অভিজ্ঞতাই আলাদা। তবে এ ক্ষেত্রে অনেকগুলো সামঞ্জস্য বা মিলও রয়েছে। প্রায় ৪৭ শতাংশ রোগীই জানিয়েছেন, তাদের অশরীরী বা দেহের বাইরে চলে যাওয়ার অভিজ্ঞতা হয়েছিল।
ডা. জেফরি নিয়ার-ডেথ এক্সপেরিয়েন্সকে সংজ্ঞায়িত করেছেন ‘হৃদকম্পন না থাকা কোনো ব্যক্তির কোমায় চলে যাওয়া বা চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মৃত ব্যক্তির অভিজ্ঞতা হিসেবে, যেখানে ওই ব্যক্তি দেখে, শোনে, আবেগ অনুভব করে, এমনকি অন্যান্য প্রাণীর সঙ্গে যোগাযোগও করে।’
অভিজ্ঞতা শেয়ার করা ব্যক্তিরা দাবি করেছেন, তাদের চেতনা তাদের শরীর থেকে আলাদা হয়েছিল এবং সেটা অনেকটা শরীরের ওপরে চক্কর দেওয়ার মতো। যেখানে তাদের চারপাশে কী ঘটছিল, তা শুনতে ও দেখতে পেয়েছিলেন তারা।
অনেকেই অদ্ভুত এক টানেল বা সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে পার হওয়ার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন, যার শেষ প্রান্তে উজ্জ্বল আলো দেখা গেছে। এরপর সেই জগতে তারা আগেই মারা গেছেন এমন প্রিয়জনের সাক্ষাৎ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন। অনেকে শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের সব ঘটনা দেখতে পাওয়ার দাবি করেছেন। বেশির ভাগ মানুষই অপরিমেয় ভালোবাসা ও চূড়ান্ত শান্তি অনুভবের কথাও জানিয়েছেন। এই সময় তাদের এমন অনুভূতি হয়েছে যে, এই জগৎই তাদের আসল বাড়ি। সূত্র: এনডিটিভি