মিশিগানে গির্জায় সন্দেহভাজন হামলাকারী ইরাক যুদ্ধে অংশ নেন, নিহত বেড়ে ৫

0
44
হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের ল্যাটার ডে সেইন্টস গির্জায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়, ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগানের মরমন (ল্যাটার-ডে সেইন্টস) গির্জায় এক ব্যক্তি সদর দরজা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ঢুকে যান। এরপর তিনি সেখানে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন। গির্জাটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। গুলি ও আগুনে সেখানে অন্তত চারজন নিহত হওয়ার খবর দিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা। আহত হয়েছেন  অন্তত আটজন। পরে পুলিশের গুলিতে সন্দেহভাজন হামলাকারী নিহত হন।

মরমন গির্জা হলো খ্রিষ্টানদের বিশেষ ধর্মীয় সংগঠনের গির্জা। পুলিশ জানায়, স্থানীয় সময় গতকাল রোববারের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম থমাস জ্যাকব স্ট্যানফোর্ড। বয়স ৪০ বছর। তিনি একসময় মার্কিন মেরিন সেনা ছিলেন। থাকতেন পার্শ্ববর্তী বার্টন শহরে। থমাস জ্যাকব ইচ্ছাকৃতভাবে গির্জাটিতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে আগুন ও ধোঁয়ায় পুরো গির্জা ছেয়ে যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নথি অনুযায়ী, থমাস জ্যাকব ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন মেরিন সেনা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। অংশ নিয়েছিলেন ইরাক যুদ্ধেও।

প্রাথমিকভাবে স্থানীয় কর্মকর্তারা গুলিতে দুজন নিহত হওয়ার এবং আহত অবস্থায় আরও আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করার কথা জানান। তবে কয়েক ঘণ্টা পর জানানো হয়, আগুন ও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন গির্জাটির ভেতরে আরও দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। বলা হয়েছে, ধ্বংসস্তূপে আরও ভুক্তভোগী থাকতে পারেন।

পুলিশ জানায়, গুলি ছোড়ার পাশাপাশি সন্দেহভাজন হামলাকারী এক পর্যায়ে গির্জার ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেন। দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়লে ভয়াবহ রূপ নেয়।

স্থানীয় গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক টাউনশিপের পুলিশপ্রধান উইলিয়াম রেনিয়ে রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভুক্তভোগীদের কয়েকজনের বিষয়ে এখনো বিশদ জানা যায়নি। থমাস জ্যাকব যখন গাড়ি চালিয়ে গির্জাটিতে ঢুকে পড়েন, তখনো সেখানে কয়েক শ মানুষ ছিলেন।

উইলিয়াম রেনিয়ে আরও বলেন, ল্যাটার ডে সেইন্টস গির্জায় এ ঘটনার খবর পাওয়ার ৩০ সেকেন্ডের ভেতরে দুজন আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাঁদের একজন স্টেট ডিপার্টমেন্ট অব ন্যাচারাল রিসোর্সেসের, অন্যজন গ্র্যান্ড ব্লাঙ্ক টাউনশিপের। এ ঘটনা শুরুর আট মিনিটের মাথায় গির্জার গাড়ি রাখার জায়গায় গুলি করে ওই সন্দেহভাজন বন্দুকধারীর মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। উইলিয়াম রেনিয়ে জানান, সন্দেহভাজন ব্যক্তির বাড়িতে তল্লাশি চালাবেন তদন্তকারীরা। তাঁর ফোনের রেকর্ড ঘেঁটে ঘটনাটির উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানার চেষ্টা করা হবে।

মিশিগানের গ্র্যান্ড ব্লাঙ্ক টাউনশিপে ৭ হাজার ৭০০ মানুষ বসবাস করেন। ডেট্রয়েট শহর থেকে জায়গাটি ৬০ মাইল বা প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তর–পশ্চিমে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার লেখেন, ‘গ্র্যান্ড ব্ল্যাঙ্ক কমিউনিটির জন্য আমার হৃদয় ভেঙে যাচ্ছে। যেকোনো জায়গায়, বিশেষ করে উপাসনালয়ে সহিংসতার ঘটনা অগ্রহণযোগ্য।’

ঘটনাটি সম্পর্কে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অবহিত করা হয়েছে। তিনি নিজের ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, এটিকে যুক্তরাষ্ট্রে খ্রিষ্টানদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে চালানো আরেকটি হামলা বলেই মনে হচ্ছে। এফবিআই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। আমাদের দেশে সহিংসতার এমন মহামারি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.