মিয়ানমার থেকে ৯০০ কুকি অনুপ্রবেশে উদ্বেগে ভারত

0
16
মণিপুরে নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় নিবিড় তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে
প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার থেকে অন্তত ৯০০ কুকি জঙ্গি মণিপুরে প্রবেশ করেছে। ভারতের অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা বিভাগের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে আজ শনিবার এ কথা জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিং। তিনি বলেছেন, ‘যতক্ষণ না এই গোয়েন্দা তথ্য ভুল প্রমাণিত হচ্ছে, ততক্ষণ একে ১০০ শতাংশ সঠিক বলেই ধরতে হবে। তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিতে হবে।’
 
এই প্রথম নির্দিষ্টভাবে মণিপুর সরকার মিয়ানমার থেকে আসা কুকি জঙ্গির সংখ্যা জানাল। এর জেরে রাজ্য ও দেশের সীমান্ত অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
 
মণিপুরে গত দেড় বছরের সহিংসতায় অন্তত আড়াই শ জনের মৃত্যু হয়েছে। গৃহহীন হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
 
মণিপুরের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২৮ সেপ্টেম্বর রাজ্যে বড় ধরনের হামলার আশঙ্কা করছে গোয়েন্দা দপ্তর। বিষয়টি মাথায় রেখে গত দুই দিন সরকারের বিভিন্ন বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। গতকাল শনিবারও এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি ছাড়াও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনী, আসাম রাইফেলস ও ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
 
ভারতের ‘ইন্ডিয়া টুডে’ পত্রিকা জানিয়েছে, জঙ্গিরা ৩০ জনের একেকটি দলে বিভক্ত হয়ে সীমান্তে অবস্থান করছে। ২৮ সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি সময়ে প্রধানত মণিপুরের মেইতেই সম্প্রদায়ের গ্রামে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।
 
সম্ভাব্য এই সহিংসতার আশঙ্কায় সীমান্ত জেলা, বিশেষত ফেরজাওল, চুরাচাঁদপুর ও কামজংয়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনী এলাকায় নিবিড় তল্লাশি ও পর্যবেক্ষণ চালাচ্ছে।
 
ইতিমধ্যে চুরাচাঁদপুর জেলার সামুলামলান অঞ্চল থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করেছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে স্থানীয়ভাবে তৈরি করা রকেট শেল ও তিনটি মর্টার, বিভিন্ন আকারের তিনটি রকেটের মাথার অংশ, গোলাবারুদ, গ্রেনেডসহ কিছু ক্ষেপণাস্ত্র। জঙ্গিরা কোথা থেকে অস্ত্রশস্ত্র পাচ্ছে, তা খতিয়ে দেখে এখন তা বন্ধ করার ওপরে জোর দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী।
 
পরিবর্তিত এই পরিস্থিতির কারণে সরকার সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে সন্দেহজনক কার্যকলাপ প্রশাসনকে জানানোর অনুরোধ করেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে প্রশাসনকে। তবে এর অন্য বিপদ রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দাদেরই একাংশ।
 
মণিপুরের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক বলেন, ‘নিজেদের অঞ্চলকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য গঠিত স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর হাতে যে অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে, বিভিন্ন সরকারি এবং নাগরিক সংগঠনের প্রতিবেদন থেকে তা স্পষ্ট। এ অবস্থায় সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে খানিকটা মরিয়া হয়েই যদি স্থানীয় বাসিন্দাদের বলে নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে, তবে সহিংসতা আরও বাড়তে পারে।’

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.