মিতুকে একাধিকবার হত্যার পরিকল্পনা করেন বাবুল, অভিযোগ মিতুর বাবার

0
187
বাবুল আক্তার।

গায়েত্রী অমর শিং সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে টেলিফোনে একাধিকবার হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন তার বাবা সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা মোশাররফ হোসেন। এমনকি বাবুল আক্তারও বেশ কয়েকবার মিতুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসীম উদ্দিনের আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন এসব তথ্য আদালতে তুলে ধরেন। সাক্ষ্য শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী তাকে জেরা করেন। আগামী ৮ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুর রশিদ বলেন, মামলার প্রথম সাক্ষী ভুক্তভোগী মিতুর বাবার সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। আসামির আইনজীবী তাকে কিছুক্ষণ জেরাও করেন। পরবর্তী শুনানিতেও জেরা করবেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, সাক্ষী মোশাররফ হোসেন চার্জশিটের বাইরে গিয়ে নতুন কিছু তথ্য আদালতে তুলে ধরেছেন। গায়েত্রীর সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ করলেও তদন্ত কর্মকর্তাদের বিষয়টি বলেছিলেন কিনা তা তিনি মনে করতে পারছেন না বলে জেরায় জানিয়েছেন। একাধিক সাক্ষাতকারে বাবুলকে প্রথমে নির্দোষ বলেছিলেন। জেরায় সাক্ষাতকার দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও কি বলেছিলেন তা মনে করতে পারছেন না বলে তিনি জানান।

আদালতে মোশাররফ হোসেন বলেন, বাবুলের সঙ্গে গায়েত্রীর সম্পর্কের বিষয়টি মাহমুদা জানতে পারেন। এর পর থেকে বাবুল তাকে বেশি বেশি অত্যাচার করতে থাকেন। এ জন্য বাবুল তার মেয়েকে খুনের পরিকল্পনা করেন। খুন করতে সোর্স কামরুল শিকদার মুসাকে কাজে লাগান তিনি।অস্ত্র কেনার জন্য বাবুল তাকে ৭০ হাজার টাকাও দিয়েছিলেন। ঘটনার আগে বাবুল চীনে যান। তখন মাহমুদাকে হত্যার দেন বাবুল।

দুপুরে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বাবুলকে আদালতে হাজির করা হয়। ওই সময় তার দুই সন্তানও বাবার সঙ্গে দেখা করতে আসে। প্রথমে পুলিশ বাধা দিলেও পরে আদালত অনুমতিতে তারা বাবার সঙ্গে কথা বলে। খাবার বিরতির সময়ও তারা বাবার সঙ্গে কথা বলে।

চলতি বছরে ১৩ মার্চ সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। বাবুল ছাড়া অন্য আসামি হলেন- পলাতক কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুসা, অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, পলাতক মো. খাইরুল ইসলাম ওরফে কালু ও শাহজাহান মিয়া। বর্তমানে বাবুল, ওয়াসিম, শাহজাহান ও আনোয়ার কারাগারে। এহতেশামুল জামিনে। কামরুল, খাইরুল ছাড়া অপর পাঁচ আসামি উপস্থিত ছিলেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে দিতে যাওয়ার পথে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি এলাকায় বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানমকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। পরদিন বাবুল বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে পিবিআই ২০২১ সালের ১২ মে মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। সেই দিন মিতুর বাবা পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.