মালয়শিয়ার পর্যটনশিল্পের প্রচারণার অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছিল ‘মিস্টার অ্যান্ড মিস সেলিব্রিটি ইন্টারন্যাশনাল ২০২৩’ নামের সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। বাংলাদেশসহ ২৯টি দেশের ৬০ জন প্রতিযোগী এতে অংশ নিয়েছিলেন। ১ মে অনুষ্ঠিত মূল প্রতিযোগিতার সেরা দশে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশের এফা তাবাসসুম।
ইন্টারন্যাশনাল সেলিব্রিটি প্যাজেন্টস গ্রুপ এন্টারপ্রাইজ আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় ছেলেদের মধ্যে প্রথম হয়েছে তাইওয়ান এবং মেয়েদের মধ্যে মঙ্গোলিয়া। প্রথম রানারআপ (পুরুষ) থাইল্যান্ড ও প্রথম রানারআপ (নারী) ভিয়েতনাম। দ্বিতীয় রানারআপ হয়েছে হংকং (ছেলে) এবং স্বাগতিক মালয়েশিয়া (মেয়ে)।
চার দেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে প্রতিযোগিতায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশি মডেল ও কোরিওগ্রাফার আজরা মাহমুদ। তাঁরই ট্যালেন্ট ক্যাম্প (এএমটিসি) থেকে এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এফা তাবাসসুম ও এম ডি ইমরান। আজরা মাহমুদ ডিরেক্টরশিপে আরও অংশ নিয়েছিলেন নেপালের নাফিসা ও রাচেন্দ্রা এবং ভারতের শুভঙ্কর ও ঐশ্বরিয়া। সেরা দশে নাফিসা ও শুভঙ্করও ছিলেন। বাংলাদেশের জন্য আরেকটি আনন্দের সংবাদ হলো প্রতিযোগিতার অন্যতম বিচারক ছিলেন মিস ইউনিভার্স বাংলাদেশ ২০১৯ বিজয়ী শিরিন আক্তার শিলা। তিনিও আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প থেকে তৈরি হওয়া।
এ প্রতিযোগিতার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে মালয়েশিয়া থেকে ফোনে আজরা মাহমুদ বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে লাক্স সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় কাজ করছি। আমার ২০ বছরের ক্যারিয়ারে আমি স্বপ্ন দেখেছি, আমাদের দেশের ফ্যাশন শোগুলো আন্তর্জাতিক মানের হবে। সেটা গত ১০ থেকে ১২ বছরে আমরা পেরেছিও। জুরহেম কিংবা আড়ং ফ্যাশন শোর মতো দেশে অনেক মানসম্মত ফ্যাশন শো এখন হচ্ছে। কিন্তু এখনো অনেকে ফ্যাশন শো, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা আর মডেলিং নিয়ে হাসিঠাট্টা করেন। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ থেকে যারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় যাচ্ছে, তাদের যদি আমরা একটু সহযোগিতা করি, তাতে দেশের নামই উজ্জ্বল হবে। নিজের দেশকে আরেকটু সুন্দরভাবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উপস্থাপন করার ইচ্ছা থেকেই আমার এই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার সঙ্গে যুক্ত হওয়া।’
আজরা মাহমুদ আরও বলেন, প্যাজেন্টের মালিক লেনার্ড ট্যানের সঙ্গে কোরিয়ায় পরিচয়। এত দিন পর্যন্ত প্রতিযোগিতাটি মালয়শিয়ায় স্থানীয়ভাবে আয়োজন করা হতো। এবারই প্রথম মালয়েশিয়ার টুরিজম যুক্ত হয়েছে। আর সে কারণেই প্রতিযোগিতাটি আন্তর্জাতিকভাবে আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিযোগিতাকে আন্তর্জাতিক রূপ দিতেই আজরা মাহমুদকে কান্ট্রি ডিরেক্টর হিসেবে যুক্ত হতে আমন্ত্রণ জানান লেনার্ড ট্যান। নেপাল, বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার দায়িত্বে ছিলেন আজরা মাহমুদ। তবে শ্রীলঙ্কা থেকে এবার কেউ অংশ নেননি।
বাংলাদেশ থেকে অংশ নেওয়া দুই মডেলকে নানাভাবে বাছাই করে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচন করেন আজরা মাহমুদ। তাঁদের নিয়ে আজরা বলেন, ‘এফা দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছে। দেশে থেকেই ইন্ডাস্ট্রির জন্য নতুন কিছু করার ইচ্ছাশক্তি দেখেছি তার মধ্যে। এই প্রতিযোগিতা থেকে ফিরে সে আইকন হিসেবে দেশকে কিছু দিতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। এম ডি ইমরানও ফ্যাশন জগতে কাজ করছে, তার নিজের একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ডও আছে।’
চূড়ান্ত বিজয়ীর মুকুট না পাক, সেরা দশে এফাকে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত আজরা মাহমুদ বলেন, ‘প্রথমবারেই এফা টপ টেন পর্যন্ত যেতে পেরেছে, সেটাই অনেক বড় পাওয়া। আমরা নিজেদের দেশকে একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারছি, প্রতিনিধিত্ব করতে পারছি, এটাও কম পাওয়া নয়।’