মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে নৌকাডুবিতে শতাধিক নিখোঁজ, বাংলাদেশিসহ উদ্ধার ১৩

0
19
নিখোঁজদের উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করছেন মালয়েশিয়ার সামুদ্রিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থার (এমএমইএ) সদস্যরা। মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছে, ৯ নভেম্বর ২০২৫, ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ার জলসীমার কাছে একটি নৌকাডুবির ঘটনায় শতাধিক অভিবাসনপ্রত্যাশী নিখোঁজ হয়েছেন। আজ রোববার পর্যন্ত ১২ জনকে জীবিত এবং ১ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মালয়েশিয়ার সামুদ্রিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা (এমএমইএ)। নৌকাটি মিয়ানমারের বুথিডং থেকে যাত্রা শুরু করেছিল। এতে প্রায় ৩০০ জন ছিলেন।

মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলের কেদাহ রাজ্যের পুলিশপ্রধান আজলি আবু শাহের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা বেরনামা জানায়, জীবিত উদ্ধার ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি, দুজন রোহিঙ্গা এবং তিনজন মিয়ানমারের নাগরিক। উদ্ধার মরদেহটি একজন রোহিঙ্গা নারীর। মালয়েশিয়ার পর্যটন দ্বীপ লংকাউইয়ের কাছাকাছি জলসীমা থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।

শনিবার লংকাউইয়ে কয়েকজন সন্দেহভাজন রোহিঙ্গা অভিবাসনপ্রত্যাশীকে পাওয়া যায়। এরপর আজ থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করে এমএমইএ।

কেদাহ ও পার্লিসের এমএমইএর ফার্স্ট অ্যাডমিরাল রোমলি মুস্তাফা জানান, নৌকাটি ডুবেছে তিন দিন আগে। তবে এখনো আরও জীবিত বা মরদেহ উদ্ধারের সম্ভাবনা রয়েছে।

মিয়ানমারে বছরের পর বছর ধরে নিপীড়িত ও নাগরিক অধিকার বঞ্চিত রোহিঙ্গারা সুযোগ পেলেই দেশত্যাগ করেন। বেশির ভাগই সমুদ্রপথে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। কিন্তু এই অঞ্চলের প্রায় সব দেশ অভিবাসী নিতে রাজি নয়। তাই তারা রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে দেখে।

কেদাহ পুলিশের প্রধান আজলি আবু শাহ জানান, মিয়ানমারের বুথিডং থেকে যাত্রা শুরু করা নৌকাটি মালয়েশিয়ার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছার পর আরোহীরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে যান। সেখান থেকে তাঁরা তুলনামূলক ছোট তিনটি নৌকার প্রতিটিতে প্রায় ১০০ জন করে ওঠেন। যাঁরা এসব অভিবাসনপ্রত্যাশীদের নৌকা ঠিক করে দিয়েছিলেন, তাঁরাই তাঁদের এই কৌশল শিখিয়ে দিয়েছিলেন, যাতে করে মালয়েশিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দেওয়া যায়।

আবু শাহ বলেন, বাকি দুটি নৌকার অবস্থান এখনো জানা যায়নি। তবে ডুবে যাওয়া নৌকার আরোহীদের উদ্ধারে অভিযান চলমান রয়েছে।

বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, মালয়েশিয়ার সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, রোহিঙ্গারা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া বা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ জন্য তাঁদের একেকজনকে ৩ লাখ ৫২ হাজার থেকে ৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা (৩ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ ডলার) গুনতে হয়।

প্রায় সময় নৌকাগুলো বেশ দুর্বল হয়ে থাকে। থাকে না কোনো লাইফ জ্যাকেট। থাকলেও আরোহীদের অনেকে লাইফ জ্যাকেট পরেন না।

নভেম্বর থেকে সাগর তুলনামূলকভাবে শান্ত হতে শুরু করলে রোহিঙ্গাদের সমুদ্রপথে মিয়ানমার ছাড়ার হিড়িক পড়ে যায়। এতে মাঝেমধ্যেই নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মালয়েশিয়ার উপকূলে কয়েকটি নৌকাডুবির ঘটনায় ২০ জনের বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশীর সলিলসমাধি হয়েছিল।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.