মাধ্যমিকে ফিরছে বিভাগ বিভাজন, অর্ধবার্ষিকীর বাকি মূল্যায়ন হচ্ছে না

0
61
মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী চলতি বছর থেকে নবম শ্রেণিতে বিভাগ (সায়েন্স, আর্টস ও কমার্স) বিভাজন তুলে দেওয়া হয়েছিল। তবে ফের মাধ্যমিকে বিভাগ বিভাজন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর তা এ বছর থেকেই কার্যকর হচ্ছে।

এ ছাড়া পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে। যতদূর সম্ভব মূল্যায়ন পদ্ধতি জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০১২-এর মতো হবে। পাঠ্যবইয়েও আনা হবে পরিবর্তন। রোববার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত পরিপত্র জারি হয়েছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২-এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি বাস্তব সমস্যা রয়েছে। ফলে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতেই এসব নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনাগুলো হলো– প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির পাঠ্যবইয়ের সঙ্গে ধারাবাহিকতা রেখে ইতোমধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির পাঠ্যবইগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে; এ ক্ষেত্রে পাঠদান পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা হবে।

নতুন পুস্তক মুদ্রণ ও চলমান মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে জরুরি নির্দেশনা

ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে চলমান পাঠ্যবইগুলো ২০২৪ সালে বহাল থাকবে, ২০২৫ সালে যথাসম্ভব সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবই সরবরাহ করা হবে; ২০২৪ সালের অবশিষ্ট সময়ে ও বার্ষিক পরীক্ষায় ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির প্রতিটির ছয়টি করে বিষয়ভিত্তিক যে মূল্যায়ন কার্যক্রম অসম্পন্ন রয়েছে, সেগুলো আর অনুষ্ঠিত হবে না। সংশোধিত ও পরিমার্জনকৃত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সংশোধিত ও পরিমার্জিত মূল্যায়ন পদ্ধতির রূপরেখা শিগগির বিদ্যালয়গুলোতে পাঠানো হবে।

২০২৫ সালে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের  বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রেখে আগের শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবইগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত বই) শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হবে। আগের শিক্ষাক্রম অনুসারে প্রণীত বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখাভিত্তিক এই পাঠ্যবইগুলোর একটি সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা এক শিক্ষাবর্ষের মধ্যেই পাঠ্যসূচিটি সম্পন্ন করতে পারে। পাঠদান ও মূল্যায়ন পদ্ধতি আগের শিক্ষাক্রম অনুসারে পরিচালিত হবে।

যেসব শিক্ষার্থী ২০২৫ সালে নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের আগের শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত শাখা ও গুচ্ছভিত্তিক সংশোধিত ও পরিমার্জিত পাঠ্যবইগুলো (২০২৩ শিক্ষাবর্ষে ব্যবহৃত) দেওয়া হবে। এসব শিক্ষার্থী নবম ও দশম শ্রেণি মিলে দুই শিক্ষাবর্ষে সম্পূর্ণ পাঠ্যসূচি শেষে ২০২৭ সালের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে। শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, প্যাডাগগ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.