হামলায় আহতও হয়েছে অন্তত ২০ জন। এমনকি বসতঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে। থমথমে অবস্থা বিরাজ করায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আহাজারি চলছে ঘরে ঘরে। নৌকায় ভোট দেয়ায় অপরাধে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি তছনছ, লুটপাট করা হয়েছে মূলবান জিনিসপত্র। আগুনও দেয়া হয়েছে বসতঘরে।
ভুক্তভোগীরা জানায়, মাদারীপুরের কালকিনির চর ঠেঙ্গামারা গ্রামে কয়েকশ’ অস্ত্রধারী হামলা চালায় বেদে সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর। বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকরা দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে নি:শ্ব অসহায় লোকজন। রোববার (৭ জানুয়ারি) থেকে মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) টানা তিনদিন ধরে এই অচল অবস্থা চলে কয়ারিয়া, ফাসিয়াতলা, নয়াকান্দি, ঘটকচর, শশিকর, কেন্দুয়াসহ অন্তত ৩৫টি গ্রামে। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে নৌকার অনেকে এজেন্ট ও কর্মী ও সমর্থকরা। এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে পরিস্থিতি। এতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এমন তাণ্ডবকে ১৯৭১ সালের পাক বাহিনীর ঘটনার সঙ্গে তুলনা করে দোষীদের বিচার দাবি করেছেন নৌকার পরাজিত প্রার্থী।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সদ্য বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
ভুক্তভোগীরা কয়েকজন জানান, এক সঙ্গে কয়েকশ’ মানুষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালিয়েছে। ঘর থেকে সবকিছু নিয়ে গেছে। নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, দামি আসবাবপত্র, খাবারের চাল-ডালও বাদ পড়েনি। পা ধরে তাদের নিষেধ করলেও কেউ শোনেনি এই কথা। এর বিচার চাই।
পরাজিত নৌকার প্রার্থী ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ বলেন, ‘বিজয়ী হওয়ার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগমের লোকজন এ হামলা চালিয়েছে। এটি পাক হানাদার বাহিনীর ঘটনাকেও হার মানায়। এ ঘটনায় দোষীদের বিচার হওয়া উচিত।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম বলেন, ‘কয়েকটি স্থানে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। যারা ঘটিয়েছে তারা সন্ত্রাসী। এই সন্ত্রাসীদের বিচার চাই। ঘটনার সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কেউ জড়িত নয়।’
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম জানান, কয়েকটি স্থানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের ধরতে পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
মাদারীপুর-৩ আসনে ঈগল প্রতীকে ৯৬ হাজার ৩৩৩ পেয়ে বিজয়ী হন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাহমিনা বেগম। তিনি কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরদিকে নৌকা প্রতীকে ড. আবদুস সোবহান মিয়া গোলাপ পান ৬১ হাজার ৯৭১ ভোট। পরাজিত এই প্রার্থী কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশান সম্পাদক।