দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাভোগী প্রায় দুই কোটি মানুষকে টার্গেট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধাভোগীদের কার্ড জমা নেওয়া হচ্ছে, যা ভোট দেওয়া সাপেক্ষে ফেরত দেওয়া হবে। ভোটকেন্দ্রে না গেলে কার্ড বাতিলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ভয়–ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে।
আজ সোমবার বিকেলে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির এসব অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক বিশ্বের চোখে ধুলা দিতে আওয়ামী লীগ সরকার এই অমানবিক পন্থা নিয়েছে।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, যশোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ অনেক জেলায় ইতিমধ্যে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী ভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি, জিআর, টিআর, ওএমএস, টিসিবি প্রভৃতি সামাজিক সুরক্ষার উপরকারভোগীদের কার্ড জমা নিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা–কর্মীরা।
রুহুল কবির বলেন, নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমানের ঔদ্ধত্য ও হুংকার দেখে মনে হচ্ছে, তিনি আওয়ামী সেবাদাসে পরিণত হয়েছেন। তাঁর জেনে রাখা উচিত, সংবিধানে ভোট দেওয়া যেমন মানুষের অধিকার, তেমনি ভোট না দেওয়াও মানুষের মৌলিক অধিকার। ভোট দেওয়ার জন্য কাউকে বাধ্য করা যাবে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে এখন নির্বাচন কমিশন নব্য নিপীড়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পর পুলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণের সময় নেতা–কর্মীদের আটক করেছে বলে অভিযোগ করেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, অনেক জায়গায় লিফলেট নিয়ে পড়ার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। মানিকগঞ্জে বিএনপির লিফলেট নিয়ে পড়ার কারণে এক পোশাক ব্যবসায়ীকে আটক করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে প্রায় এক ঘণ্টা দোকানপাট বন্ধ রাখেন তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীরা।
আন্দোলনের নেতৃত্বে তরুণেরা যাতে থাকতে না পারেন, সে জন্য যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অন্যদের মামলা দিয়ে ঘরছাড়া, এলাকাছাড়া, গ্রামছাড়া করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব।
আগামীকাল মঙ্গলবার শুরু হওয়া তিন দিনের নির্বাচন বর্জন ও অসযোগ আন্দোলনের পক্ষে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে বিএনপির সব পর্যায়ের নেতা–কর্মী ও সমমনা দলগুলোর নেতা–কর্মীরা মাঠে থাকবেন বলেও উল্লেখ করেন রুহুল কবির।