ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে দিশেহারা গ্রাহক

0
83
ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল
মে-জুন মাস এলেই বিদ্যুতের ভুতুরে বিলের অভিযোগ বাড়ে। বছরের এই দুই মাসে যেন ভূত চাপে প্রিপেইড মিটারের ঘাড়ে। গ্রাহকেদের অভিযোগ, অতিরিক্ত টাকা কাটা হচ্ছে। এ নিয়ে বিদ্যুত অফিসগুলোতে অভিযোগের পাহাড়। কিছু এলাকায় বিক্ষোভও করেন গ্রাহকরা; যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, মিটার নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির জন্যই নাকি এই সমস্যা।
 
মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা এ এইচ তুর্য। গেল ফেব্রুয়ারিতে স্মার্ট মিটার নেওয়ার পর থেকেই বাড়ছে তার বিদ্যুৎ বিল। গেল মাসে যা দ্বিগুণের বেশি বাড়ে।
 
ভুক্তভোগী তুর্য বলেন, চার থেকে সাড়ে চার হাজারের বেশি বিল কোনও মাসে আসতো না। কিন্তু গত মাসে এই বিল ১০ হাজার টাকার মতো এসেছে।
 
জুন মাসের বিল দেওয়ার পর জমা ছিল ৬৬ টাকা। পরদিনই বকেয়া বিল দাঁড়ায় ৮১৪ টাকায়, আর এক সপ্তাহের মধ্যেই যা বেড়ে হয় ২ হাজার ২৮৪ টাকা।
 
মিরপুরের প্রদীপ কুমারেরও একই অভিযোগ। ডেসকোর এই গ্রাহকের দাবি, এপ্রিলে তার বিল ছিল ১৯৭০ টাকা, মে মাসে হয় ২৪০০ আর জুনে হয় ২ হাজার ৮০০ টাকা। অথচ, জুনের ১৫ দিন তিনি বাসাতেই ছিলেন না।
 
এ ভুক্তভোগী জানান, মাসের অর্ধেক সময় আমি বিদ্যুৎ ব্যবহার করেছি। সে হিসেবে বিল অনেক কম আসার কথা। কিন্তু সেটা হলো উল্টো।
 
মে জুন মাসে বেশি বিলের অভিযোগে বিক্ষোভ হয় কয়েকটি এলাকায়; যা আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কাজ করছেন তারা।
 
তিনি বলেন, মূলত আমরা গ্রাহকদের ঠিক ভাবে সচেতন করতে পারিনি। সেই সচেতনতার অভাবেই এই বিলের ব্যাপারে তাদের কিছু ভুল বোঝাবুঝি রয়েছে।
 
জবাবদিহিতা না থাকায় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো গ্রাহকদের জিম্মি করে বিলের বোঝা চাপাচ্ছে বলে মনে করেন অধ্যাপক শামসুল আলম।
 
তিনি বলেন, ভুল বোঝাবুঝি, এসব কোনো পেশাদারি কথা না। ভোক্তা বলছে তার বিদ্যুৎ বিল বেশি আসছে, এটা খতিয়ে দেখা রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্ব। অভিযোগ নিয়ে যা হচ্ছে এবং অভিযোগ নিষ্পত্তিকারী কর্তৃপক্ষ যে আচরণ করছে, তা অপরাধ যোগ্য কাজ।
 
২০২০ সালেও দেশজুড়ে ভুতুড়ে বিলের অভিযোগে তদন্ত কমিটি করে বিদ্যুৎ বিভাগ। কারসাজির অভিযোগে কয়েকজনের শাস্তিও হয়। তবে মে-জুন আসলেই বেশি বিলের অভিযোগ থেকেই গেছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.