ভার্জিনিয়ার লে. গভর্নর পদে ভারতীয় বংশোদ্ভূত মুসলিম হাশমির জয়

0
20
ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী ঘাজালা হাশমি।

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ভার্জিনিয়ার লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী ঘাজালা হাশমি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপাবলিকান দলীয় প্রার্থী জন রিডকে পরাজিত করে বিজয়ী হয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঘাজালা হাশমি। ভার্জিনিয়া সিনেটে তিনিই প্রথম মুসলিম ও প্রথম দক্ষিণ এশীয়-আমেরিকান সদস্য হিসেবে রাজ্যের ১৫তম সিনেট জেলার প্রতিনিধিত্ব করছেন। লেফটেন্যান্ট গভর্নর পদে ঘাজালা হাশমির এই জয়ের ফলে শিগগিরই ওই সিনেট আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৯ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন ঘাজালা হাশমি। ওই বছর তিনি এক চমকপ্রদ জয়ে রিপাবলিকানদের দখলে থাকা সিনেটের আসন পুনরুদ্ধার করে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন।

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছর পর ২০২৪ সালে, তাকে সিনেটের শিক্ষা ও স্বাস্থ্যবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়। প্রজনন অধিকার ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের মতো ডেমোক্র্যাটদের ইটি অগ্রাধিকারমূলক ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই পদ।

হাশমির ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, অন্যদের জীবন মান উন্নয়নে নিজেকে নিবেদিত করেছেন হাশমি। পাশাপাশি আবাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবেশগত ন্যায়বিচারের মতো বৈষম্যসংক্রান্ত বিষয়ে কাজ করে আসছেন তিনি। ১৯৬৪ সালে ভারতের হায়দরাবাদে জন্মগ্রহণ করেন ঘাজালা হাশমি। তার বাবা-মা জিয়া হাশমি ও তানভীর হাশমি। শৈশব কেটেছে হায়দরাবাদের মালাকপেটে নানাবাড়িতে। মাত্র চার বছর বয়সে মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান এবং জর্জিয়ায় বাবার সঙ্গে যোগ দেন।

ঘাজালা বাবা অধ্যাপক জিয়া হাশমি আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী। সেখান থেকে তিনি এমএ ও এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব সাউথ ক্যারোলিনা থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে পিএইচডি সম্পন্ন করেন। পরে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাদানে যুক্ত হন এবং নিজের প্রতিষ্ঠিত সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের পরিচালক হিসেবে অবসর নেন।

তার মা তানভীর হাশমি বিএ ও বিইড ডিগ্রিধারী। তিনি পড়াশোনা করেছেন হায়দরাবাদের ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেনস কলেজ থেকে। হাশমি হাইস্কুলে ভ্যালেডিক্টোরিয়ান হিসেবে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং একাধিক পূর্ণ স্কলারশিপ ও ফেলোশিপ অর্জন করেন। তিনি জর্জিয়া সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি থেকে স্নাসতকসহ বিএ ডিগ্রি ও আটলান্টার এমোরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমেরিকান সাহিত্য বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।

১৯৯১ সালে স্বামী আজহার রফিককে নিয়ে হাশমি রিচমন্ড অঞ্চলে চলে যান। তাদের দুই প্রাপ্তবয়স্ক কন্যা ইয়াসমিন ও নূর চেস্টারফিল্ড কাউন্টি পাবলিক স্কুল এবং ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছেন। প্রায় ৩০ বছর ধরে হাশমি শিক্ষকতা করেছেন। প্রথমে ইউনিভার্সিটি অব রিচমন্ডে, পরে রেইনল্ডস কমিউনিটি কলেজে অধ্যাপনা করেন তিনি। রেইনল্ডস কলেজে তিনি সেন্টার ফর এক্সেলেন্স ইন টিচিং অ্যান্ড লার্নিংয়ের (সিইটিএল) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.