চিকিৎসা-সংক্রান্ত ছুটি নিয়েছেন মিয়ানমারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ট শোয়ে। এ অবস্থায় তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। সোমবার জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এ কথা বলা হয়েছে।
এক বিবৃতিতে জান্তা জানায়, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট ইউ মিন্ট শোয়ে অসুস্থ। তাঁর চিকিৎসা প্রয়োজন। এজন্য তিনি ছুটিতে আছেন। তিনি সুস্থ হয়ে না ফেরা পর্যন্ত তাঁর দায়িত্ব পালন করবেন মিন অং হ্লাইং।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। অভ্যুত্থান রক্তপাতহীনভাবে হলেও কয়েক দিন পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে রক্তাক্ত বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।
অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করলেও এখন মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী দেশটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিজুড়ে গৃহযুদ্ধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে বিপ্লবী বাহিনী রাখাইন রাজ্যের প্রধান সমুদ্রসৈকত ও এর পাশের বিমানবন্দর নিজেদের দখল নিয়ে নিয়েছে। এ রাজ্যে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জান্তা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এর পরই এসব দখলের ঘোষণা করে বিদ্রোহীরা।
তারা দক্ষিণ রাখাইন রাজ্যের বৃহৎ হোটেলসহ থান্ডওয়ে বিমানবন্দর ও নাগাপালি সমুদ্রসৈকতের আশপাশের সমগ্র অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনটি এ অর্জনকে দীর্ঘ যুদ্ধের সর্বশেষ পর্যায় হিসেবে দেখছে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি দেশজুড়ে বিভিন্ন সশস্ত্র সংগঠন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধযুদ্ধ শুরু করে। গত বছরের অক্টোবরে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন জোট গঠন করে ‘অপারেশন ১০২৭’ নামে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে একটি সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু করে। আরাকান আর্মিও ওই জোটে যোগ দেয়। গত বছরের শেষের দিকে আরাকার আর্মি তাদের ১৫ বছরের সশস্ত্র প্রতিরোধ পুনরায় শুরু করে। বিদ্রোহীদের তীব্র হামলার মুখে টিকতে না পেরে নিজেদের দখলে থাকা সামরিক ঘাঁটি ছেড়ে পিছু হটার নির্দেশ দেন মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সো মিন তেত। এই ঘটনার শাস্তি হিসেবে তাঁকে কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার। খবর এএফপির।