ভারতে ৪৫৩ কর্মী ছাঁটাই করেছে গুগল

0
191
গুগল, ফাইল ছবি: রয়টার্স

গত মাসে গুগলের প্রধান সুন্দর পিচাই প্রায় ১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের কথা ঘোষণা করেন। ওই সিদ্ধান্তের দায় সম্পূর্ণভাবেই তাঁর বলেও জানিয়েছিলেন পিচাই। কিন্তু আয় বা রাজস্ব কমে যাওয়ার দোহাই দিয়ে কর্মীদের ছাঁটাই করা হলেও পিচাইয়ের ‘দুর্দান্ত পারফরম্যান্স’-এ খুশি হয়ে গত ডিসেম্বর মাসে গুগল তাঁর বেতন বিপুল হারে বাড়িয়েছে। এক দিকে নিজের বেতন বৃদ্ধি আর অন্য দিকে বিপুল পরিমাণ কর্মী ছাঁটাই—এই বাস্তবতায় পিচাইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে কোনো কোনো মহল।

১২ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের সময় পিচাই দাবি করেছিলেন, এত ছাঁটাইয়ের কারণ হলো অতিরিক্ত নিয়োগ।তাঁর ভাষ্যমতে, মহামারির দুই বছরে প্রচুর কর্মী নিয়োগ দিয়েছে গুগল। অর্থনৈতিক মন্দার সময় এই ছাঁটাই প্রক্রিয়া কোম্পানির প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে বলেও তিনি দাবি করেছিলেন।

জানুয়ারি মাসে গুগলের কর্মীদের ‘গুগলার’ বলে সম্বোধন করে মেইল করেছিলেন পিচাই। তিনি লিখেছিলেন, ‘সবাইকে একটি খারাপ খবর দেওয়ার আছে। গুগল থেকে ১২ হাজার কর্মীকে ছেঁটে ফেলা হচ্ছে। এ জন্য আমি সত্যিই দুঃখিত। আমি জানি, এটা কতটা কঠিন। এত দিন সবার প্রচেষ্টায় আমাদের কোম্পানি সাফল্যের পথে হেঁটেছে। সবার অবদান প্রকৃত অর্থেই অনস্বীকার্য। ছাঁটাইয়ের এই সিদ্ধান্তের দায় সম্পূর্ণভাবে আমার। গত দুই বছরে আমরা অনেক কিছু অর্জন করেছি। আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় আমরা বিনিয়োগ করেছি। মান বজায় রাখার পাশাপাশি পরিষেবা খাতেও উন্নয়ন বজায় রেখেছি।’

শুধু গুগল নয়, সম্প্রতি অন্যান্য বৃহৎ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোতেও চলছে কর্মী ছাঁটাইয়ের মচ্ছব। মাইক্রোসফট কিছুদিন আগেই ১০ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। ফেসবুকও ১১ হাজার কর্মী ছাঁটাই করেছে। টেসলা ও স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক টুইটারের মালিক হওয়ার পর ৬০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করেছেন। অ্যামাজনও ১৮ হাজার কর্মী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করেছে।

জানুয়ারি মাসে ভারতীয় গণমাধ্যম ইকোনমিক টাইমসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে মাসে গড়ে প্রতিদিন তিন হাজার কর্মী ছাঁটাই হয়েছে প্রযুক্তি খাতে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সব মিলিয়ে প্রযুক্তি খাতের কোম্পানিগুলো থেকে প্রায় দেড় লাখ কর্মী ছাঁটাই করা হয়।

ছাঁটাইয়ের পেছনে বিশ্লেষকেরা দুটি কারণ চিহ্নিত করেছেন। প্রথমত, করোনা মহামারির সময় মানুষের প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় বিপুল কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু এখন আর তাঁদের প্রয়োজন হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার। এই খাতে বিপুল বিনিয়োগ করছে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো। সে জন্য ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.