পম্পেও তাঁর বইয়ে লিখেছেন, ‘২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্ব যে পারমাণবিক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল, সে বিষয়ে বিশ্ব সঠিকভাবে জানে, আমি তা মনে করি না।’
সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিক জানিয়েছেন, সে সময় তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সুষমা তাঁকে জানিয়েছিলেন, বিমান হামলার ঘটনায় পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে পাকিস্তান। ভারতও তার পাল্টা জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বইয়ে পম্পেও লিখেছেন, সে সময় ২৭ ও ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনি যুক্তরাষ্ট্র–উত্তর কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য হ্যানয়ে ছিলেন। কিন্তু তাঁর দল এই সংকট এড়াতে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদের সঙ্গে রাতের মধ্যেই কাজ করেছিল।
পম্পেও বলেন, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে থাকার সময় ওই রাতের কথা কখনোই ভুলব না। সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আলোচনা করাই শুধু যথেষ্ট ছিল না। কাশ্মীরের সীমান্ত নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের কারণে ভারত ও পাকিস্তান তখন একে অপরকে হুমকি দেওয়া শুরু করেছিল।
পম্পেও তাঁর বইয়ে বলেছেন, হ্যানয় থেকেই ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন। সব শুনে তিনি ভারতকে কিছু না করতে বলেছিলেন। বিষয়টি বোঝার জন্য কিছু সময় চেয়েছিলেন তিনি।
‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চি’– বইয়ে পম্পেও আরও লিখেছেন, ‘আমি রাষ্ট্রদূত (তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা) জন বোল্টনের সঙ্গে কাজ শুরু করেছিলাম। পাকিস্তানের নেতা তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গেও কথা বলেছিলাম।’
৫৯ বছর বয়সী সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলে তিনি বুঝেছেন, ভারতই পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর কোনো পক্ষই আসলে এমন হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে না—এটা নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদকে বোঝাতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে গেছে।
মাইক পম্পেওর এই দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মাইক পম্পেও লিখেছেন, ‘এই ভয়ংকর পরিস্থিতি এড়াতে আমরা যা করেছি, তা অন্য কোনো দেশ করতে পারেনি। জ্যেষ্ঠ কূটনীতিক ডেভিড হাল পাকিস্তানে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তিনিও ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অগ্রাধিকারের বিষয়টি জানতেন।’