জামালপুরে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। গতকাল শুক্রবার দুপুরে ব্রহ্মপুত্রের বুকে এ নৌকাবাইচ দেখতে ভিড় করে কয়েক হাজার মানুষ। দীর্ঘদিন পর ব্রহ্মপুত্রের বুকে ছলাৎ ছলাৎ শব্দে গর্জে উঠে বাংলার বাঘ, সোনার তরী ও হীরার তরীসহ ১৫টি নৌকার মাঝিমাল্লার বৈঠা।
জামালপুর পৌরসভা ও জেলা ক্রীড়া সংস্থার সার্বিক সহযোগিতায় পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে এ নৌকাবাইচের আয়োজন করে জামালপুর সমিতি, ঢাকা। পৌর এলাকার মধ্য ছনকান্দা থেকে ব্রহ্মপুত্র সেতু পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার নদীতে অনুষ্ঠিত হয় এ নৌকাবাইচ।
সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাজ্জাদ আনসারী বলেন, অপসংস্কৃতি আর শহরের যান্ত্রিক কোলাহলের ভিড়ে দিন দিন হারাতে বসেছে বাঙালির উৎসব আর সংস্কৃতি। তবুও যেটুকু টিকে আছে, তাতেই খুশি এ মানুষগুলো। পড়ন্ত বিকেলে চমৎকার এ নৌকাবাইচ তাদের নিয়ে গেছে এক রকম ঘোরের রাজ্যে।
সরেজমিন দেখা গেছে, নৌকাবাইচ উপলক্ষে শহরজুড়ে উৎসবমুখর পরিবেশ। ভাদ্রের তপ্ত দুপুর গড়ানোর আগেই জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ছোট-বড় নৌকা নিয়ে হাজির হন প্রতিযোগী ও দর্শকরা।
টাঙ্গাইলের মধুপর থেকে নৌকাবাইচ দেখতে আসা রনি শেখ, আশরাফ খান জানান, দীর্ঘদিন পর সুন্দর একটি নৌকাবাইচ দেখে ভালো লাগল।
আয়োজক কমিটির পরিচালক হিল্লোল সরকার বলেন, গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখতেই এ নৌকাবাইচের আয়োজন। ১৫টি প্রতিযোগী দল সুসজ্জিত নৌকা আর বাহারি পোশাক পরে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিযোগিতা চলার সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে মাঝিদের ভাটিয়ালি গান আর পানিতে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ আওয়াজে পুরো এলাকা মুখরিত হয়।
শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে পৌর এলাকার ব্রহ্মপুত্র সেতু এলাকায় নৌকাবাইচের উদ্বোধন করেন জামালপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ। প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফ্ফর হোসেন সিআইপি। বিশেষ অতিথি ছিলেন জামালপুর সমিতি ঢাকার মহাসচিব অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ ক্যাপ্টেন শফিকুল ইসলাম ও জামালপুর পৌর মেয়র ছানোয়ার হোসেন ছানু। নকআউট পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতা হয়। শনিবার ৮টি নৌকার মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা।