ব্যাংক খাতে সংস্কার: লুটপাট বন্ধ, আস্থা বেড়েছে গ্রাহকের

0
25

ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে সবচেয়ে বেশি অনিয়ম হয় ব্যাংকিং খাতে। প্রভাবশালীদের লুটপাটে খাদের কিনারে চলে যায় বেশ কয়েকটি ব্যাংক।

বর্তমান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর দায়িত্ব নিয়েই ব্যাংকিং খাতের লুটপাট বন্ধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেন । বছরজুড়েই চলমান ছিল সংস্কার কার্যক্রম। শুরুতে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেয়া হয় ১৪টি ব্যাংকের।

ব্যাংকিং খাত পুনর্গঠন ও আর্থিক ভিত্তি শক্তিশালী করতে গঠন করা হয় টাস্কফোর্স। আর্থিক অবস্থা জানতে সম্পদ মূল্যায়ন করা হয় দুর্বল ৬টি ব্যাংকের। একীভূতকরণে প্রণয়ন করা হয় ব্যাংক রেজুলেশন অ্যাক্ট। এ বিষয়ে একটি বিভাগও গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। খেলাপি ঋণ নির্ধারণে চালু করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসব উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।

সেন্টার ফর পলিসির (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকিং খাতটা, বিশেষ করে বলতে গেলে সেখানেই অনেক দৃশ্যমান সংস্কারের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে। অন্যান্য খাতের সাথে তুলনা করলে ব্যাংকিং খাতে কিন্তু অনেক অগ্রগতি হয়েছে এবং আমার মনে হয় যে কালক্ষেপণ না করে যতটা সম্ভব দ্রুততার সাথে করা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে কিন্তু অগ্রগতি সংস্কারের পথে যাচ্ছে। আসলে এই সংস্কারটা অনেকদিন ধরেই চলবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) সাবেক মহাপরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী বললেন, ব্যাংকগুলোতে পরিবর্তন আসার সাথে সাথে গভর্নেন্স অনেক ইম্প্রুভ করে গেছে। লক্ষণীয়ভাবে যে জিনিসগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক করেছে সেটা হচ্ছে এই যে এতগুলো ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করে দিয়েছে। আবার এখন এনপিএল ক্যালকুলেশনটা আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী করতেছে। ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিন্যান্স একটা করছে। সবগুলো কিন্তু অবশ্যই প্রভাব রাখা শুরু করেছে।

সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে ব্যাংক কোম্পানি আইন এবং বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডারেও। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সংস্কারের প্রতিটি উদ্যোগেরই অগ্রগতি আছে। আইন না থাকায় এর আগে একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হয়নি বলেও জানান মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

তিনি বলেছেন, সুপারভিশনের মাধ্যমে আগে আমরা কোনও একটা ব্যাংকের ক্ষেত্রে রিঅ্যাক্টিভ মেজার নিতাম। এখন করছি প্রোঅ্যাক্টিভ। আগে থেকে আমরা সাবধান করে দিচ্ছি। তোমার কিন্তু এইখানে দুর্বলতা দেখা দিচ্ছে। এখনই তুমি সংশোধন করো অন্যথায় ভবিষ্যতে তোমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে। ব্যাংক রেজুলেশন অর্ডিনেন্স জারি করা হয়েছে যার মাধ্যমে একীভূতকরণসহ বিভিন্ন প্রদক্ষেপ গ্রহণ করার আইনি ভিত্তি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিবাচক উদ্যোগের ফলে ব্যাংকিং খাত এখন অনেকটাই স্থিতিশীল বলেও জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা।

আলমগীর হোসেন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.