পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ দেশে আছেন নাকি চলে গেছেন, সে ব্যাপারে জানেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, ‘আমি এখনো সঠিক জানি না, তিনি আছেন নাকি চলে গেছেন। আমাকে জেনে কথা বলতে হবে।’
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয় যে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ দেশ ছেড়েছেন।
বেনজীর আহমেদের দেশত্যাগ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাঁকে আমরা এখনো নিষেধাজ্ঞা দিইনি। সে যদি নিষেধাজ্ঞার আগে চলে গিয়ে থাকে…৷ আমি এখনো কিন্তু সঠিক জানি না, সে আছে নাকি চলে গেছে। আমাকে জেনে কথা বলতে হবে। তিনি আছেন কি না, না আছেন, সেটা আমি এখনো সুনিশ্চিত নই। আমার পুলিশ বাহিনী অনেক ভালো কাজ করছে, অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। কোনো ব্যক্তি যদি কিছু করে থাকে, তার দায় প্রতিষ্ঠান নেয় না।’
এ বিষয়ে আরেক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কেউ অন্যায় করে থাকেন, অন্যায়ভাবে ধন-সম্পদ কুক্ষিগত করে থাকেন, আমাদের দেশে সেই অনুযায়ী বিধান রয়েছে, বিচার হবে। সেখানে আমাদের কিছু বলার নেই৷ সে কী দোষ করেছে, কী না দোষ করেছে, সেগুলো আমাদের কাছে এখনো কোনো তথ্য নেই৷ এগুলোর তদন্ত হচ্ছে৷ তদন্তের পরে জানা যাবে তিনি দোষী, না নির্দোষ কিংবা কত পরিমাণ অর্থ বানিয়েছেন, কর ফাঁকি দিয়েছেন বা সম্পদ বানিয়ে তার তথ্য দেননি। এগুলো আমাদের সংশ্লিষ্ট বিভাগ অনুসন্ধান করছে। অনুসন্ধানের আগে আমার মুখ দিয়ে বলা সঠিক নয়।’
আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ড নিয়ে যা বললেন মন্ত্রী
এ সময় সাংবাদিকেরা সম্প্রতি ভারতে বাংলাদেশের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম হত্যাকাণ্ড বিষয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, মাননীয় সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে ভারতে। তাই মামলাটি ভারতেই হয়েছে এবং ভারত থেকেই সেটা হবে। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দী বিনিময় প্রত্যাবর্তন চুক্তি রয়েছে। কাজেই ভারত সরকারই তাদের কাছে আবেদন করবে। যেহেতু ঘটনা ঘটেছে তাদের দেশে। আমাদের দেশে হলে আমরা আবেদন করতাম৷ তখন মূল মামলাটা আমাদের থাকত।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সবাই উদ্বিগ্ন৷ যারা অপরাধী, যাঁরা এই খুন করেছেন কিংবা যাঁরা সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের আইন অনুযায়ী বিচার করা হবে৷ নেপালে যিনি (সিয়াম) আছেন, তাঁকে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হবে। এখনো তদন্ত চলছে৷ এখনই আমরা সুনিশ্চিতভাবে বলতে পারব না, সে কোথায় আছে৷ আমরা যেটা শুনেছি, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি। যেখানে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তারা যদি আমাদের সম্পৃক্ত করে, তাহলে সেখানে আমরা গিয়ে সম্পৃক্ত হব।’
মাদ্রাসাশিক্ষার্থীদের নিয়ে টিএসসি মিলনায়তনে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আয়োজিত ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক বক্তৃতা প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। এই অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি৷
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এতে প্রধান আলোচক ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী৷ আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের মাদ্রাসা শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম৷