বীরকন্যা প্রীতিলতা: এক অগ্নিকন্যার জন্মদিনে শ্রদ্ধাঞ্জলি

0
18
অগ্নিকন্যা প্রীতিলতা

আজ ৫ মে। এই দিনেই জন্মেছিলেন বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের এক সাহসিনী, এক অনন্য বিপ্লবী—প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার। ১৯১১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের পটিয়ার ধলঘাট গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন যিনি, তিনি শুধু এক নারী নন—তিনি এক সংগ্রামের প্রতীক, এক আত্মত্যাগের অনুপ্রেরণা।

প্রীতিলতার ডাক নাম ছিল রানী, আর ছদ্মনাম ছিল ফুলতার। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে ছিল স্বাধীনচেতা মানসিকতা। শিক্ষাজীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। প্রীতিলতা ১৯২৭ সালে খাস্তগীর বালিকা বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯২৯ সালে ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে ঢাকা বোর্ডে প্রথম স্থান অধিকার করেন, এবং এর দুই বছর পর কলকাতার ঐতিহ্যবাহী বেথুন কলেজ থেকে দর্শনশাস্ত্রে ডিস্টিংশনসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

তবে শুধু শিক্ষাজীবনেই নয়, তার কৃতিত্ব উজ্জ্বলভাবে ছড়িয়ে আছে ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র আন্দোলনের ইতিহাসে। মাস্টারদা সূর্যসেনের নেতৃত্বে বিপ্লবী দলে যোগ দিয়ে প্রীতিলতা হয়ে ওঠেন স্বাধীনতার অগ্নিসেতু। ১৯৩২ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি আক্রমণ করেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব।

সেই অভিযানে প্রীতিলতা সফল হন, কিন্তু শত্রুপক্ষের একটি গুলিতে আহত হন। নিজের দেশের কোনোরকম তথ্য শত্রুপক্ষকে দিতে একদমই রাজি ছিলেন না তিনি। এ কারণে শত্রুপক্ষের হাতে ধরা পড়ার আগেই সঙ্গে রাখা সায়ানাইড (বিষ) খেয়ে আত্মহত্যা করেন প্রীতিলতা। মাত্র ২১ বছর বয়সে নিজের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন দেশমাতৃকার জন্য।

আজ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের জন্মদিনে আমরা কেবল তাকে স্মরণ করি না—আমরা স্মরণ করি সেই আদর্শ, সেই সাহস, সেই আত্মত্যাগ, যা আজও আমাদের জাতীয় চেতনায় আলো জ্বালিয়ে রাখে। তিনি আমাদের ইতিহাসের অঙ্গনে কেবল একটি নাম নন—তিনি অনন্ত শক্তি, সাহস ও স্বাধীনতার প্রেরণা।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.