বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়ার অস্তিত্ব আছে…

0
133
জেফার রহমান। ছবি: ফেসবুক

পয়লা বৈশাখে দর্শকদের মাতাতে প্রথমবার পাবনায় গিয়েছিলেন সংগীতশিল্পী জেফার রহমান। দারুণ এক অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছেন। এবার ব্যস্ত হচ্ছেন গান নিয়ে। ঈদ উপলক্ষে ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির ওয়েব ফিল্ম লাস্ট ডিফেন্ডার অব মনোগামী দিয়ে প্রথমবার তিনি অভিনয়ে নাম লিখিয়েছেন। অভিনয়, গানসহ নানা প্রসঙ্গে তাঁর সঙ্গে গতকাল কথা বলেছেন মনজুরুল আলম

জেফার রহমান। ছবি: ফেসবুক
জেফার রহমান। ছবি: ফেসবুক

মনজুরুল আলম: ঈদের বিরতি শেষে বৈশাখীর আয়োজন দিয়ে ফেরা, আয়োজনে পাবনায় ভক্তদের সঙ্গে কেমন কাটল?

জেফার রহমান: পাবনায় বিশাল আয়োজনে হাজার হাজার ভক্তের সামনে গান করেছি। অনেক ভালো অভিজ্ঞতা। বুঝতে পারছিলাম ভক্তরা আমার গান উপভোগ করছেন। আমার পছন্দের গানগুলো করেছি। সেগুলো ভক্তরা পছন্দ করেছে। ভালো সময় কেটেছে।

মনজুরুল আলম: সেখানে মনে রাখার মতো কোনো অভিজ্ঞতা হয়েছে কি?

জেফার রহমান: আমরা খুবই অল্প সময় নিয়ে গিয়েছিলাম। যে কারণে খুব বেশি বেড়ানোর সুযোগ পাইনি। যেটুকু সময় পেয়েছি এর মধ্যে পাবনার মালাই চপ খেয়েছি। ভালো লেগেছে। যেটুকু বুঝতে পেরেছি পাবনার মানুষ আন্তরিক। ভক্তরা অনেক বেশি রোমাঞ্চিত ছিল। তারা মন্তব্য করেও জানিয়েছে ভালো লাগার কথা। লাইভের দর্শকদের ভালোবাসা বুঝতে পারছিলাম। বলতে পারেন, এসব অভিজ্ঞতা মনে রাখার মতো।

মনজুরুল আলম: চাঁদরাত থেকে আপনার নামের আগে গায়িকা থেকে নায়িকা পরিচয় যোগ হয়েছে।

জেফার রহমান: হা হা হা। তা-ই তো সবাই বলছে। আসলে আমি অনেক আগে থেকে অভিনয় প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু কখনোই রাজি হইনি। ভালোভাবেই সময় নিয়ে অভিনয় করতে চেয়েছি। মনোগামীতে অভিনয় করে সাত দিন ধরে অভিনেত্রী হিসেবে দারুণ অভিজ্ঞতা হচ্ছে।

ফারুকী ও চঞ্চলের সঙ্গে জেফার। ছবি: ফেসবুক
ফারুকী ও চঞ্চলের সঙ্গে জেফার। ছবি: ফেসবুক

মনজুরুল আলম: আপনার নিজের অভিজ্ঞতা বলবেন?

জেফার রহমান: বুঝতে পারছি, প্রচারের পর থেকেই অনেক দর্শক মনোগামী দেখছেন। তাঁরা রিভিউ দিচ্ছেন। আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই। বেশির ভাগ অ্যাপ্রিশিয়েট করছে। ফিল্মটি আমি প্রিমিয়ারে দেখেছি। রিলিজের পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখেছি। সবাই প্রশংসা করেছে। এখানে বাস্তবতার আলাদা একটি পটভূমিকে দেখানো হয়েছে। বিষয়টিকে সুন্দরভাবে সমন্বয় করেছেন পরিচালক ফারুকী ভাই।

মনজুরুল আলম: গল্পের মতো বাস্তব এই বিষয়বস্তু নিয়ে দর্শকদের কাছ থেকে কিছু কি শুনেছেন?

জেফার রহমান: অনেক ধরনের কনটেন্ট তৈরি হয়। সেখানে এমন কনটেন্টে অভিনয় করাটা চ্যালেঞ্জিং। টপিকটা যেহেতু ট্যাবু, তারপরও কনটেন্ট নিয়ে দর্শকেরা প্রশংসা করছেন। এটা কিন্তু বাস্তবতার বাইরে কিছু না। ‘এমন টপিক কেন’—এমন কিছু দর্শক বা সমালোচক কারও কাছ থেকে শুনিনি। মনোগামী নিয়ে খারাপ কিছু এখনো আমি শুনিনি। আমাকে অনেকেই ট্যাগ করেছেন, সেগুলো দেখেও খারাপ কিছু পাইনি। এটা সত্যি, টপিকটা অনেক সেনসিটিভ, সেটা ফারুকী ভাই ঠিকমতো হ্যান্ডেল করেছেন।

মনজুরুল আলম: তাহলে তো আপনার অভিনয় দিয়ে ফেরাটা সার্থক?

জেফার রহমান: আমি নাটক-সিনেমায় অভিনয়ের অনেক প্রস্তাব পেয়েছি। সব সময়ই আমি ‘না’ করে আসছি। আমার কাছে মিউজিকই ছিল গুরুত্বপূর্ণ। পরে ফারুকী ভাই যখন অভিনয়ের প্রস্তাব দেন, তখন আর দ্বিতীয়বার ভাবিনি। তিনি ভালো একজন পরিচালক। তাঁর অবশ্যই ভালো কোনো পরিকল্পনা ছিল। যে কারণে ফিল্মটিতে যুক্ত হওয়া। প্রচারের পর দর্শকদের প্রতিক্রিয়ায় অভিনয় নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। ভালো চিত্রনাট্য, পরিচালক, ভালো টিম পেলে গানের পাশাপাশি অভিনয় করব।

জেফার রহমান। ছবি: ফেসবুক
জেফার রহমান। ছবি: ফেসবুক

মনজুরুল আলম: ওয়েব ফিল্মটির চিত্রনাট্য হাতে পাওয়ার পর গল্পটি কীভাবে দর্শক নেবেন, এটা নিয়ে কোনো ভাবনা কাজ করছিল?

জেফার রহমান: খুব একটা চিন্তা হয়নি। কারণ, আমি ফারুকী ভাইয়ের হাতে সব ছেড়ে দিয়েছিলাম। আমি তো অভিনেত্রী নই, গান করি। সেখানে ফারুকীর ভাইয়ের আইডিয়া ছিল আমাকে কাস্ট করার। গল্প শোনার পর আমার মনে হয়েছিল, এখানে চরিত্রের অনেক লেয়ার আছে। এটা কমপ্লিটলি পজিটিভ কোনো চরিত্র নয়, তবে লেয়ারগুলো আমার কাছে ভালো লেগেছিল। দর্শক কী বলবে, সেটা ভাবিনি। কাজেই মনোযোগ ছিল।

মনজুরুল আলম:কিছু দৃশ্যে দর্শক চঞ্চল চৌধুরীর অভিনয় দেখে বিনোদিত হয়েছেন, সেই দৃশ্যের শুটিংয়ের সময়ের অভিজ্ঞতা কেমন?

জেফার রহমান: চঞ্চল ভাইয়ের কান্না করাসহ বেশ কিছু দৃশ্যের শুটিংয়ের সময়ে আমি চরিত্র থেকে বের হয়ে হেসে দিয়েছিলাম। দেখা যেত হাসার জন্য শুটিংয়ে ব্যাঘাত ঘটত। সত্যি বলতে, সবাই এনগেজ ছিল প্রডাকশনটির সঙ্গে। এ ছাড়া প্রথমবার অভিনয় করছিলাম, কিছুটা ভয়, কিছুটা মজা-অভিজ্ঞতা—দুটিই ছিল। ফারুকী ভাই ও চঞ্চল ভাই লিজেন্ডারি দুজন শিল্পী। তাঁদের সঙ্গে অভিনয় করে আমি অনেক বেশি সাপোর্ট পেয়েছি, শিখেছি।

সঙ্গীতশিল্পী জেফার
সঙ্গীতশিল্পী জেফার,

মনজুরুল আলম: ছবির গল্পের বিষয়টিকে আপনার জায়গা থেকে কীভাবে দেখেন?

জেফার রহমান: মনোগামীতে যে পরকীয়া মতো বিষয় দেখানো হয়েছে, এটা কিন্তু শুধু আমাদের সমাজে নয়, বিশ্বের সব দেশেই পরকীয়ার অস্তিত্ব আছে। হয়তো মানুষ এটা নিয়ে কথা বলে না। এটা ট্যাবু টপিক। মনোগামীতে একটা পার্থক্য দেখানো হয়েছে, বার্তা রয়েছে। সচরাচর যেসব হয়, সেগুলোই কিন্তু গল্পে দেখানো হয়েছে। এখানে গল্পের সঙ্গে কিন্তু অনেকেই রিলেট করতে পেরেছেন। একেকজন একেকটা চরিত্রের সঙ্গে রিলেট করছে। এটা আমি নিজেও শুনেছি। অনেক দর্শক বলছেন, মনোগামীর সঙ্গে নিজেদের রিলেট করতে পেরেছেন।

মনজুরুল আলম: এর মধ্যে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন?

জেফার রহমান: আমি আগেও প্রস্তাব পেয়েছি, এখনো পাচ্ছি। কিন্তু হুট করেই অভিনয়ে নাম লেখাতে চাই না। একটু বাছবিচার করেই নাম লেখাতে চাই। তার আগে প্রাধান্য দেব গানে।

মনজুরুল আলম: তাহলে এখন গানে পুরো মনোযোগ?

জেফার রহমান: আমার বেশ কিছু গান করা আছে। একটি গান পুরো ইংরেজিতে করা। ইংরেজি গান দিয়েই আমার শুরুটা। সেই গান আসছে। এ ছাড়া আমার বাংলা চার-পাঁচটি একক গান প্রস্তুত রয়েছে। যেগুলো শিগগিরই রিলিজ দেব। যৌথভাবেও গান করা আছে। সেগুলোও প্রস্তুত। পর্যায়ক্রমে গানগুলো আসবে। ঈদ শেষ, এখন আমার পুরো ব্যস্ততা গান নিয়েই।

চরকিতে মিলছে “মিনিস্ট্রি অব লাভ”-এর ফিল্ম “লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী”
চরকিতে মিলছে “মিনিস্ট্রি অব লাভ”-এর ফিল্ম “লাস্ট ডিফেন্ডারস অব মনোগামী”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.