বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবারও কমেছে

0
201
জ্বালানি তেল

বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আবারও কিছুটা কমেছে। আজ সোমবার সকালে এশিয়ার বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ২০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে ৭৫ দশমিক ২১ ডলারে নেমে আসে, যদিও শুক্রবার তা শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ বেড়েছিল।

এ ছাড়া ইউএস টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ কমে ব্যারেলপ্রতি ৭০ দশমিক ৪১ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন এই অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়েছিল ১ দশমিক ১ শতাংশ।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনীতিতে নানা ধরনের প্রতিকূলতা ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বৃদ্ধির সম্ভাবনায় জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা কমেছে, যদিও ওপেক ও সহযোগী দেশগুলো তেলের দাম বাড়াতে উৎপাদন কমিয়েই যাচ্ছে। ফেড নীতি সুদহার বাড়ালে প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

জুন মাস পর্যন্ত ব্রেন্ট ক্রুডের দাম টানা চতুর্থ প্রান্তিক ধরে কমেছে। সেই সঙ্গে ডব্লিউটিআই ক্রুডের দামও দুই প্রান্তিকে কমেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বের দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, অর্থাৎ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের অর্থনীতি গতি হারানোর কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতি নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তার জেরে জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।

গত বছর থেকে ফেডারেল রিজার্ভসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি সুদহার বৃদ্ধি করে মূল্যস্ফীতি মোকাবিলার চেষ্টা করছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমেছে। কিন্তু সে দেশের মূল্যস্ফীতির হার এখনো ফেডারেল রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ শতাংশ বেশি, তাই ফেড আবারও নীতি সুদহার বৃদ্ধি করতে পারে—এমন সম্ভাবনা আছে।

ন্যাশনাল অস্ট্রেলিয়া ব্যাংকের এক নোটে বলা হয়েছে, নীতি সুদহার নিয়ে আগ্রাসী অনেক মন্তব্য করা হচ্ছে। এতে বৈশ্বিক অর্থনীতির চাহিদা নিয়ে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তার জেরে জ্বালানি তেলের দাম কমছে।

নীতি সুদহার বাড়লে মার্কিন ডলারের দর আরও বাড়তে পারে। ফলে আমদানিকারী দেশগুলোর আমদানি ব্যয় বেড়ে গেলে তেলের চাহিদাও কমতে পারে। গত জুন মাসে রয়টার্সের এক জরিপে অর্থনীতিবিদ ও বিশ্লেষকেরা ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দামের পূর্বাভাস করেছেন ব্যারেলপ্রতি গড়ে ৮৩ দশমিক শূন্য ৩ ডলার।

তবে সৌদি আরব তেলের দাম বাড়াতে মরিয়া হয়ে রয়েছে। ওপেক যে উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছে, তার ওপর সৌদি নিজে আরও ১০ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। জুলাই মাস থেকেই তা কার্যকর হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার তেলের কৌশলগত মজুত ভান্ডার আবারও ভরিয়ে তুলছে। এসব কারণে বছরের দ্বিতীয় ভাগে তেলের দাম বাড়তে পারে।

রয়টার্সের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ওপেক তেল উৎপাদন হ্রাসের ঘোষণা দিলেও ইরাক ও নাইজেরিয়ার তেল উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে জুন মাসেই জোটের তেল উৎপাদন সামান্যই কমেছে। এই বাস্তবতায় চলতি সপ্তাহের শেষ দিকে ওপেকের সম্মেলনের দিকে বিনিয়োগকারীরা তাকিয়ে আছেন।

এদিকে গত সপ্তাহে উৎপাদনে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেল খনির সংখ্যা আরও একটি কমে দাঁড়িয়েছে ৫৪৫টি, ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের পর যা সর্বনিম্ন। গ্যাস ক্ষেত্রের সংখ্যা ছয়টি কমে দাঁড়িয়েছে ১২৪টি, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর যা সবচেয়ে কম।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, এপ্রিল মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে দৈনিক ১২ দশমিক ৬১ মিলিয়ন ব্যারেল, ফেব্রুয়ারি মাসের পর যা সর্বনিম্ন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.