পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদের উপনির্বাচনে বিজয়ী চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ফুলের মালা পরিয়ে দেওয়ার অপরাধে এক উপপরিদর্শককে (এসআই) পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে নেছারাবাদ থানার এসআই মজিবুল হককে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এসআই মজিবুল হককে থানা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল অনুষ্ঠিত গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদ উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমান আওয়ামী লীগের প্রার্থী ফারজানা আক্তারকে হারিয়ে বিজয়ী হন। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ফলাফল ঘোষণার পর গাজী মিজানুর রহমানের পাটিকেলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির সামনে বাড়িতে তাঁর সমর্থকেরা জড়ো হয়ে উল্লাস করতে থাকেন। এরপর সেখানে ফুলের মালা নিয়ে যান নেছারাবাদ থানার এসআই মজিবুল হক। তিনি (মজিবুল হক) গাজী মিজানুর রহমানের গলায় ফুলের মালা পরিয়ে দেন।
এ সময় অনেকে মুঠোফোনে এ দৃশ্যের ভিডিও ধারণ করে ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা আক্তারের পক্ষ থেকে বিষয়টি পিরোজপুরের পুলিশ সুপারকে জানানো হয়। এরপর ওই রাতে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিউর রহমান নেছারাবাদ থানা থেকে মজিবুল হককে প্রত্যাহার করে পিরোজপুর পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেন।
আওয়ামী লীগের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘এসআই মজিবুল হকসহ কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তা ভোটের দিন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমানের পক্ষে কাজ করেছেন। তাঁদের আচরণ ছিল গাজী মিজানুর রহমানের কর্মীদের মতো। ভোটের দিন আমার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা হলেও পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের অসহযোগিতা ও পক্ষপাতদুষ্ট আচরণের কারণে আমাকে হেরে যেতে হয়েছে।
গত ৫ এপ্রিল গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রব সিকদার মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে গুয়ারেখা ইউনিয়ন পরিষদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আবদুর রব সিকদারের ছেলে পলাশ সিকদারের স্ত্রী ফারজানা আক্তার। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী গাজী মিজানুর রহমান ৫১৭ ভোট বেশি পেয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা আক্তারকে পরাজিত করেন। ভোট চলাকালে বিভিন্ন স্থানে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকজন আওয়ামী লীগের সমর্থক বীর মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমানের বীর নিবাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন।