বিজয় মিছিলেও ঝরেছে ১১১ প্রাণ, পঙ্গু কয়েকশ’ তরুণ

0
59
বিজয় মিছিলে গুলি

শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেন। সেদিনই ক্ষান্ত হওয়ার কথা ছিল মাসব্যাপী চলা হত্যাযজ্ঞ আর নৃশংসতার। তবে ৫ আগস্ট জনগণের বিজয় মিছিলেও চলেছে গুলি। শুধু এদিনই ঝরেছে ১১১টি তাজা প্রাণ, পঙ্গু হয়েছে কয়েকশ’ তরুণ।

রাজধানীর পঙ্গু হাসপাতালে এখনও চিকিৎসা চলছে আহত শিক্ষার্থীদের। তাদের মধ্যেই একজন আল-আমিন। নবম শ্রেণিতে এই ছাত্র দেশ বাঁচাতে গিয়ে হারিয়েছে তার পা।

আল আমিন জানান, তারা ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এলাকায় বিজয় মিছিল নিয়ে বের হয়েছিলেন। পরে থানা এলাকায় গেলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ সময় বসে ছিল আল আমিন। পরে সে উঠে দৌড় দিলে একটি গুলি এসে তার পায়ে লাগে। গুলিটি পায়ের পেছনের দিক দিয়ে ঢুকে সামনে দিয়ে বের হয়ে যায়।

তবে পা হারিয়েও কোনো ক্ষোভ নেই লড়াকু এই তরুণের। সে জানায়, দেশের জন্য যদি প্রয়োজন হয় আবারও নামতে প্রস্তুত সে। এ সময় আন্দোলনে যারা আহত হয়েছেন সরকারকে তাদের পাশে দাড়ানোরও আহ্বান জানান এই তরুণ।

ছেলের পা হারানোর আফসোস নেই আল-আমিনের বাবা-মায়েরও। তারা জানান, এই আন্দোলনে যারা পঙ্গু হয়েছেন বা গুরুতর আহত হয়েছেন তাদের যেন রাস্তায় ভিক্ষা করে না খেতে হয়। আর ৬ ঘণ্টা আগে আসলে পা কাটতে হতো না বলেও জানান তারা।

হাসপাতালের বিছানায় কাঁতরাচ্ছে তামিম নামে আরও একজন। অষ্টম শ্রেণির ছাত্র তামিমকে নিয়ে বিজয় উদযাপনে বের হয়েছিলেন তার মামা। তিনি নিজে অক্ষত ফিরতে পারলেও গুলিবিদ্ধ হয়ে কাটা পড়েছে তামিমের একটি পা।

তামিমের মামা জানান, তারা বিজয় উদযাপনে বের হয়েছিলেন। ছিল না কোনো শঙ্কা। হঠাৎ ১০-১৫ জন পুলিশ এসে গুছি ছোড়া শুরু করে। এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে পা হারাতে হয় তামিমকে।

এত আত্মত্যাগ, এত দেশপ্রেম, এত সাহস কোথায় পেলো ওরা? এত আহাজারি-কষ্ট আর হারানোর বেদনা শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পাবে তো? তবে একটাই প্রতাশা জানি যেন তাদের ভুলে না যায়।

সুমাইয়া ঐশী

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.