বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে বলেছেন, সন্ধ্যার পর গুলশান এলাকা থেকে জহির উদ্দিন স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিবৃতিতে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী শাসকগোষ্ঠীর চলমান নিষ্ঠুর কর্মকাণ্ডে প্রতীয়মান হচ্ছে যে তারা দেশের মানুষকে চায় না, তারা চায় এ দেশের ভূমি ও সম্পদ। যাতে দখলবাজি ও লুটতরাজ চালিয়ে বিদেশের মাটিতে সম্পদের পাহাড় গড়া যায়। আর এ জন্য তারা বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তারে দেশব্যাপী দমন অভিযান চালাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতার শিকার হলেন জহির উদ্দিন স্বপন।
বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর নির্যাতন-নিপীড়ন যত ভয়াবহ হবে, ততই জনগণ বলীয়ান হয়ে সরকারের পদত্যাগসহ নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারব্যবস্থা বাস্তবায়নের দাবিতে অটল থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন রিজভী। অবিলম্বে জহির উদ্দিন স্বপনের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবিও জানান তিনি।
তবে জহির উদ্দিন স্বপনকে আটক বা গ্রেপ্তারের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি।
এর আগে আজ ভোররাতে গুলশান এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হক, ঢাকা মহানগর (উত্তর) যুবদলের সদস্যসচিব সাজ্জাদুল পারভেজ ও সদস্য গোলাম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাঁদের গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনায় পল্টন থানায় করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। পুলিশের আবেদনে ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনের আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
২৮ অক্টোবরের ওই সংঘর্ষের পর থেকে বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। ইতিমধ্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার অভিযানের মুখে বিএনপির কেন্দ্রীয় অনেক নেতা আত্মগোপনে গেছেন।
গণ অধিকার পরিষদের এক নেতা গ্রেপ্তার
গণ অধিকার পরিষদের (নুরুল হক নুর) সহদপ্তর সম্পাদক আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার ঢাকার মৌচাক থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ মো. আওলাদ হোসেন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবর রামপুরা এলাকায় ভাঙচুর ও মারামারির ঘটনায় আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বলকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় তিনি সন্দেহভাজন আসামি। আজ তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে গণ অধিকার পরিষদ থেক পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বল গতকাল দলীয় কর্মসূচি শেষে ফেরার পথে হাতিরঝিল থানা–পুলিশ মৌচাক থেকে তাঁকে নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় তাঁর মুঠোফোন নম্বর বন্ধ ছিল। পরে কয়েকটি থানায় খোঁজ নিয়ে রাতে হাতিরঝিল থানায় তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবু পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দেয়নি।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান যৌথ বিবৃতিতে বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি থেকে ফেরার পথে রাস্তা থেকে একটি দলের নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়া বেআইনি ও অসাংবিধানিক। সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য ভিন্নমত দমনে মরিয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু কোনো স্বৈরাচারী সরকারই এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। আকন্দ মোহাম্মদ উজ্জ্বলের মুক্তি দাবি করেন তাঁরা।