মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের এক বিচারক। একপর্যায়ে নিজের সঙ্গে থাকা পিস্তল তাক করে স্ত্রীর বুকে গুলি করে বসেন তিনি। এতে তাঁর স্ত্রী নিহত হন। এরপর এক সহকর্মীকে পাঠানো খুদে বার্তায় বিচারক বলেন, ‘কাল আসতে পারব না, নিরাপত্তা হেফাজতে যেতে হবে।’ মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসের আদালতের শুনানিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
আদালতে বলা হয়েছে, জেফ্রি ফার্গুসন নামের ওই বিচারকের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৪৭টি আগ্নেয়াস্ত্র পাওয়া গেছে। তবে তিনি বৈধভাবেই এগুলো রেখেছিলেন। এ ছাড়া তাঁর বাড়ি থেকে ২৬ হাজারটি গোলাবারুদ উদ্ধার হয়েছে।
৭২ বছর বয়সী ফার্গুসন যুক্তরাষ্ট্রের অরেঞ্জ কাউন্টি সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক। কৌঁসুলিরা বলেন, গ্রেপ্তারের সময় ফার্গুসনের মুখ দিয়ে মদের তীব্র গন্ধ বের হচ্ছিল। তিনি পুলিশকে বলেছেন, ‘আমার ধারণা, কিছু সময়ের জন্য আমার কোনো হুঁশজ্ঞান ছিল না।’
লস অ্যাঞ্জেলেসের আদালতের শুনানিতে বলা হয়, অ্যানাহেম শহরের একটি বাড়িতে থাকতেন ফার্গুসন এবং তাঁর স্ত্রী শেরিল। গত ৩ আগস্ট এ দম্পতি বাড়ির কাছের একটি রেস্তোরাঁয় নৈশভোজে গিয়েছিলেন। সে সময় তাঁদের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।
অরেঞ্জ কাউন্টির ডেপুটি ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি ক্রিস্টোফার অ্যালেক্স আদালতে বলেন, বাদানুবাদের একপর্যায়ে ফার্গুসন তাঁর স্ত্রীর আগ্নেয়াস্ত্র তাক করার মতো করে আঙুল তোলেন। তাঁরা বাড়িতে ফেরার পরও ঝগড়া চলতে থাকে। ৬৫ বছর বয়সী শেরিল একপর্যায়ে তাঁর স্বামীকে বলে ওঠেন ‘আমার দিকে সত্যিকারের বন্দুক তাক করছ না কেন?’ তখন ফার্গুসন তাঁর গোড়ালিতে পিস্তল রাখার খাপ থেকে পিস্তল বের করে খুব কাছ থেকে স্ত্রীর বুকে গুলি করেন।
অ্যালেক্স আদালতে আরও বলেন, এ ঘটনার পর ফার্গুসন নিজেই জরুরি সহায়তা নম্বর ৯১১-এ ফোন করে বলেন তাঁর স্ত্রী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বাড়িতে একজন চিকিৎসাকর্মী পাঠানোর অনুরোধ জানান তিনি। তখন ফোনের ওপাশ থেকে একজন জানতে চান ফার্গুসন নিজেই গুলি করেছেন কিনা। তখন এ বিচারক বলেন, ওই সময় তিনি এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছেন না।
ফোন রাখার পর বিচারক ফার্গুসন আদালতে তাঁর ক্লার্কের মুঠোফোনে খুদে বার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মেজাজ ধরে রাখতে পারিনি। মাত্রই আমার স্ত্রীকে গুলি করেছি। কাল আসতে পারব না। আমাকে নিরাপত্তা হেফাজতে চলে যেতে হবে। আমি দুঃখিত।’
২০১৫ সালে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব নেন ফার্গুসন। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। তবে তিনি হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আদালতের বাইরে দাঁড়িয়ে ফার্গুসনের আইনজীবী পল মেয়ের সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এটা পরিষ্কার করতে চাই যে ঘটনাটি অনিচ্ছাকৃত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা কোনো অপরাধের ঘটনা নয়।
ফার্গুসন জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। তাঁকে মদ পান না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ৩০ অক্টোবর তাঁর আবারও আদালতে হাজিরা দেওয়ার কথা।