বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে মুডিস

0
167
মুডিস, ছবিঃ এএফপি

আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান কমিয়ে দিয়েছে। মুডিস বলেছে, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি বিদ্যমান। একই সঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতারও প্রকাশ পেয়েছে। এ কারণে মুডিস বাংলাদেশের ঋণমান একধাপ কমিয়ে বিএ৩ থেকে বি১-এ নামিয়ে দিয়েছে।

তবে বাংলাদেশের জন্য মুডিস তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রেখেছে। যদিও স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংয়ের ক্ষেত্রে ‘নট প্রাইম’ মান অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছে তারা।

মুডিস বলেছে, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার-সংকট চলমান এবং বৈদেশিক মুদ্রার মজুত কমে যাচ্ছে, যা দেশটির বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে। যার ফলাফল হিসেবে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণে যেসব পদক্ষেপ নিয়েছিল, তা পুরোপুরি প্রত্যাহার করেনি। একাধিক বিনিময় হার চালু এবং সুদের হার ঠিক করে দেওয়ার মতো অপ্রচলিত যেসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেখান থেকেও দেশটি ফিরে আসেনি। এসব পদক্ষেপ বিভিন্ন ধরনের বিকৃতি ঘটাচ্ছে।

এ ছাড়া অর্থনীতির আকারের তুলনায় কম রাজস্ব আদায়ের ফলে সরকারের পছন্দসই নীতি গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে টাকার অবমূল্যায়ন ও স্বল্প সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ফলে সুদ বাবদ সরকারকে আরও বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে, যা তার ঋণ গ্রহণের সক্ষমতাকে দুর্বল করার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুডিস আশা করছে, বিদেশি অর্থায়ন বৈদেশিক ও রাজস্বসংক্রান্ত চাপ কিছুটা কমাতে সাহায্য করবে। তবে মহামারির আগের তুলনায় বৈদেশিক পরিস্থিতি দুর্বল থাকবে এবং উঁচু মাত্রার ঋণের কারণে রাজস্ব পরিস্থিতি দুর্বল হবে। বিশেষ করে মুডিস মনে করছে, যেসব রাজস্ব সংস্কার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন হতে অনেক বছর লেগে যাবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুডিস বলেছে, দেশটি কম সুদে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থায়ন ও সহায়তা পেয়ে যাচ্ছে। ফলে বৈদেশিক ও রাজস্ব খাতে চাপ হালকা হবে বলে তারা মনে করছে।
বাংলাদেশের ঋণভার একই রকম অন্যান্য দেশের তুলনায় মাঝারি পর্যায়ে রয়েছে এবং কম সুদে দীর্ঘ সময়ের জন্য ঋণ নেওয়ার কারণে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে বলে মুডিস মনে করে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.