বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বেড়ে ১০৬

0
116
আরাকান আর্মির হামলার মুখে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিজিপি) সদস্যরা পালিয়ে বাংলাদেশের ঘুমধুম সীমান্ত ফাঁড়ির ভবনের পাশে আশ্রয় নেন, ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মিসহ স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর চলমান সংঘর্ষে নাস্তানাবুদ হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন দেশটির বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১১ জন সদস্য। এ নিয়ে সীমানার এপারে আশ্রয় নেওয়া বিজিপি সদস্যের সংখ্যা দাঁড়ালো ১০৬।

সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চলমান সংঘর্ষের জেরে এখন পর্যন্ত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির ১০৬ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। বিজিবি তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

একইদিন মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেলে বান্দরবানের এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নাগরিক নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউপির ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জলপাইতলি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাংলাদেশি নারীর নাম হাছিনা বেগম (৫২) বলে জানা গেছে। তিনি ওই এলাকার বাদশা মিয়ার স্ত্রী। এছাড়া নিহত রোহিঙ্গা নাগরিকের পরিচয় জানা যায়নি।

এদিকে, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুর এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এ কথা বলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটা আলোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই আলোচনার জন্য এবং তাদের (বিজিপি সদস্যদের) ফেরত পাঠানো বা ফেরত পাঠানো না গেলে অন্য কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটা নিয়ে কথা বলছি। চলমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ খুব নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। এ বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সীমান্তে উত্তেজনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কথা জানিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের সশস্ত্র বাহিনী বা প্যারামিলিটারি বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যদের ধৈর্য ধারণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে বর্ডারের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

সোমবার মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, জান্তা সামরিক বাহিনীর আরও বেশ কয়েকটি ঘাঁটি দখল করেছে জাতিগত স্বাধীনতাকামীরা। এছাড়া গত তিন দিনে তাদের হাতে প্রাণ হারিয়েছে দেশটির অন্তত ৬২ জন সেনা। জান্তার বিরুদ্ধে মিয়ানমারজুড়ে হামলা জোরদার করেছে সশস্ত্র এই জাতিগত স্বাধীনতাকামীরা।

গত পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব-সংঘাত চলছে দেশটির বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর। ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে জান্তার রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর এ সংঘাত বেড়ে যায়। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে মিয়ানমারের সঙ্গে দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.