বলিরেখা কমাতে

0
195
জান্নাত

সঠিকভাবে যত্ন না নিলে ত্বকে বিরূপ প্রভাব পড়ে। মুখে, ত্বকের বিভিন্ন অংশে বলিরেখা দেখা দেয়। অনেকের আবার অল্প বয়সেও ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। এর অন্যতম কারণ স্ট্রেসফুল লাইফস্টাইল। বলিরেখা কমাতে উদ্যোগ নিতে হবে। জারা’স বিউটি লাউঞ্জের সিইও ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি জানান, বাসায় রুটিন অনুযায়ী নিজের যত্ন নিতে হবে। ত্বক বুঝে ভালো ফেসিয়াল, ভালো মানের টোনার, সপ্তাহে দু’দিন স্ক্রাব করতে হবে। তারপর ভালো মানের একটি সিরাম দিতে হবে। দিনের বেলায় সানস্ক্রিন দিয়ে বাইরে যেতে হবে। ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। তিনি জানান, ভিটামিন-ই যুক্ত ময়েশ্চারাইজার ত্বকের জন্য উপযোগী। এগুলো রিংকেল কমাতে সাহায্য করে।

যারা নিয়মিত ফেসিয়াল করেন তাদের কিছু বিষয় মাথায় রাখা উচিত। বেশি জোরে চাপ দিয়ে যদি ম্যাসাজ করা হয় তাহলে তা থেকেও বলিরেখার সৃষ্টি হয়।

বলিরেখা কমাতে রূপচর্চার পাশাপাশি কিছু সুঅভ্যাস রপ্ত করতে হবে। সেসব অভ্যাস ত্বক ভালো রাখতে সহায়তা করবে।

যেসব অভ্যাস বলিরেখা কমাবে

পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের সব ক্লান্তি দূর করে। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব হলে শারীরিক অসুস্থতা তৈরি হয়। এ ছাড়া রিপ্যায়ার হরমোন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। যার ফলে এর প্রভাব দেখা দেয় বহিঃত্বকে। বিশেষ করে চোখের নিচে ভাঁজ পড়ে। বলিরেখা এড়াতে ৬-৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করুন।

পরিমাণমতো ফ্যাট ও ওমেগা ৩ গ্রহণ না করার কারণেও অল্প বয়সে বলিরেখা হয়। ডায়েট ও ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া নিজের রুটিন অনুযায়ী খাবার খান। এতে সুষম খাবার বজায় থাকে না। বিভিন্ন ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি দেখা দেয়। তাই ওজন কমাতে হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

ধূমপানের কারণেও ত্বকে ফাইনলাইন দেখা দেয়। ধূমপান করলে মস্তিষ্কের শিরা-উপশিরা ও ফুসফুসের রক্তনালিতে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না। এর বিপরীতে ক্ষতিকর পদার্থ পাম্প হওয়ায় অভ্যন্তরীণ চাপ সৃষ্টি হয়; যার ফলে ত্বকে ভিটামিন সির পরিমাণ হ্রাস পেয়ে সান প্রটেকশন ক্ষমতা কমে যায়। ত্বক ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ধূমপান থেকে বিরত থাকুন।

বলিরেখা কমাতে ত্বক সব সময় আর্দ্র ও সতেজ রাখতে হবে। দিনের পর দিন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে ত্বক পানিশূন্য হয়ে যায়। ত্বক ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। ফলমূল খেতে হবে। সেই সঙ্গে ত্বকের ধরন বুঝে ওয়াটারবেজড কিংবা অন্য উপাদানসমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
বলিরেখা এড়াতে বাইরে গেলে সব সময় সানব্লক ক্রিম দিয়ে যেতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন রোদে ত্বক পুড়তে না পারে। বাইরে থেকেও এসে ঘরোয়া উপায়ে ত্বক শীতল রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।

অনেকে মেকআপ করে ঠিকমতো তা পরিষ্কার করেন না। মেকআপ সঠিকভাবে না উঠালে তা থেকে ত্বকে ব্রণসহ নানা সমস্যা হয়। বাইরে থেকে এসে ক্লিনজিং অয়েল, মাইসেলার ওয়াটার কিংবা নারকেল তেলের সাহায্যে মেকআপ তুলুন। খুব বেশি চাপ প্রয়োগ না করে আলতোভাবে ম্যাসাজ করে মেকআপ তুলুন। যে কোনো দাওয়াত ও অনুষ্ঠানে গেলে খুব ভারী মেকআপ না করে হালকা মেকআপ করলে ত্বক অনেকটা রেহাই পাবে।

ত্বকে গ্রাভিটির প্রভাব নিয়ে সচেতন না হলেও যে স্কিন ঝুলে পরে ভাঁজের সৃষ্টি হতে পারে। এটা বোধহয় অনেকের ভাবনার বাইরে। আমরা এমন একটা জীবনযাপন করছি, যেখানে ইলেকট্রনিক পণ্যের ব্যবহার বেশি। মোবাইল ফোন হলো নিত্যদিনের সঙ্গী। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া গেমসসহ নানা কাজে আমরা যে ঝুঁকে থাকি এতে করে গ্রাভিটির টানের ফলেও ত্বকে বলিরেখার সৃষ্টি হয়।

ফেসিয়াল এক্সপ্রেশনের ব্যালান্স রাখার অভ্যাস করলে বলিরেখা অনেকটা কমানো সম্ভব। কথা বলার সময়ে নানা রকম ভঙ্গিমার কারণে কপাল, ভ্রুয়ের মাঝে, নাক, থুতনি ও ঠোঁটের চারদিকে চামড়ার যে সাময়িক ভাঁজের সৃষ্টি হয় তা বারবার পুনরাবৃত্তি ঘটলে এটি স্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই প্রয়োজন ছাড়া ফেসিয়াল এক্সপ্রেশন এড়িয়ে চলা উচিত।

ত্বক সুস্থ রাখতে চাপমুক্ত জীবনযাপন করতে হবে। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ, নেতিবাচক চিন্তাকে দূরে রাখতে হবে। এতে ত্বকে কোলাজেন বাড়বে।
মডেল: জান্নাত;

তাসনিম প্রভা

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.