সামনের মৌসুম কোন দলের ডাগআউটে থাকবেন, সেটি এখনো অনিশ্চিত। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে ক্রিস্তফ গালতিয়েরের জীবনে এবার নতুন মোড়। পিএসজিতে কোচের পদ হারাতে যাওয়া গালতিয়েরকে ধর্ম, বর্ণ ও জাতিগত বৈষম্যের অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে ছেলে ভ্লাহোভিচকেও আটক করা হয়েছে। দুজনকে আটকের বিষয়টি বার্তা সংস্থা এপিকে নিশ্চিত করেছেন নিসের প্রসিকিউটর হ্যাভিয়ের বনহম্মি।
গালতিয়েরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ অবশ্য পিএসজিতে দায়িত্ব পালনের সময়ের ঘটনার জন্য নয়। ২০২০-২১ মৌসুমে নিসের কোচের দায়িত্বে থাকার সময়ের। এ বছরের শুরুতে নিস মালিকের উদ্দেশে পরিচালক জুলিয়ান ফরনিয়েরের পাঠানো একটি মেইল ফাঁস হয়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গালতিয়েরের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো সামনে আসে।
ফাঁস হওয়া সেই ই–মেইলে গালতিয়েরের সঙ্গে কাজ করা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করতে দেখা যায় জুলিয়ানকে। যেখানে তিনি গালতিয়েরের বিরুদ্ধে কৃষ্ণাঙ্গ ও মুসলিম খেলোয়াড়দের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগ আনেন। সেই মেইলে জানা যায়, গালতিয়ের নাকি বলেছিলেন, দলে অনেক বেশি মুসলিম ও কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়।
মেইল ফাঁস হওয়ার পর গত বছরের ১৩ এপ্রিল বর্ণ ও জাতিভিত্তিক বৈষম্য নিয়ে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়। গালতিয়ের অবশ্য শুরু থেকেই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। এপ্রিলে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে নিয়ে যে দাবি করা হয়েছে, তা আমাকে স্তব্ধ করেছে। দায়িত্বহীনভাবে এমন অভিযোগ করা হয়েছে।’
সাফাই দিয়েও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি, আজ শেষ পর্যন্ত আটকই হলেন গালতিয়ের। নিয়মানুযায়ী, আটকের পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গালতিয়ের ও তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে হয় অভিযোগ গঠন করে গ্রেপ্তার দেখাতে হবে, নয়তো ছেড়ে দিতে হবে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে থানায় আসেন গালতিয়ের ও তাঁর ছেলে।
ধারণা করা হচ্ছে, যাঁরা গালতিয়েরের বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছেন, তাঁদের অনেককে সামনের দিনগুলোতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কিংবা অনেককে এরই মধ্যে তা করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ঘটনা গালতিয়েরের ক্যারিয়ারকেও সংকটে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।
এরই মধ্যে পিএসজিতে গালতিয়েরের কোচিং অধ্যায় একরকম শেষই হয়ে গেছে। ২০২২ সালে দুই বছরের চুক্তিতে প্যারিসে এলেও এক বছর পরই তাঁকে বিদায় করে দেওয়ার কথা শোনা যাচ্ছে। পিএসজির নতুন কোচ হিসেবে বার্সেলোনার সাবেক কোচ লুইস এনরিকেকে নিয়োগ দেওয়ার জোর সম্ভাবনা আছে।