টুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার নাসির আহমেদ সরকারের ছেলে হেলাল উদ্দিন। বন্ধুর শিক্ষাগত সনদ ও নাম ঠিকানা ব্যবহার করে হয়ে ওঠেন জাহাঙ্গীর আলম। এই পরিচয় ব্যবহার করে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের বেশি সময় চাকরি করেছেন তিনি। একপর্যায়ে ওই প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যান হেলাল। বুধবার রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পিবিআই উত্তর বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, হেলাল কৌশলে তাঁর স্কুলবন্ধু একই এলাকার জাহাঙ্গীরের শিক্ষার সনদপত্র, জন্মসনদ ও জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন। পরে এসব কাগজপত্রে নিজের ছবি যুক্ত করেন। সেই কাগজপত্র দিয়ে একটি কোম্পানিতে চাকরি শুরু করেন। এ সময় তাঁর প্রকৃত নাম পরিচয় গোপন করে জাহাঙ্গীর পরিচয় দেন।
পুলিশ সুপার বলেন, এ পরিচয়ে হেলাল ২০১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বরে তানজিম প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লি. কোম্পানিতে কর্মকর্তা (সেলস অ্যান্ড বিপণন) পদে চাকরি শুরু করেন। সর্বশেষ ২০২১ সালের ৯ মে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে কোম্পানির পণ্য বিক্রির ১৯ লাখ ২১ হাজার ৫০০ টাকা মার্কেট থেকে উঠিয়ে আত্মগোপনে চলে যান। এ ঘটনায় মোহাম্মদপুর থানায় তানজিম প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম হোসেন মামলা করেন।
সূত্র জানায়, প্রথমে মামলাটি তদন্ত করেন মোহাম্মদপুর থানার এসআই শফিউল আলম। মামলার তদন্ত শেষে তিনি জাহাঙ্গীর আলমের নাম-ঠিকানা সঠিক না পেয়ে তাঁকে অব্যাহতির আবেদনসহ আরেক আসামির মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেন। বাদী গোলাম হোসেন ওই চার্জশিটের বিপক্ষে নারাজি আবেদন করেন। পরে আদালত মামলা নতুন করে তদন্ত করার জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
সর্বশেষ মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে, যাঁর শিক্ষা সনদপত্র ব্যবহার করেছেন তাঁর নাম জাহাঙ্গীর আলম। তিনি প্রতারক হেলালের স্কুলজীবনের বন্ধু। বর্তমানে জাহাঙ্গীর ভোলার চর মোতাহার আলিম মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী পদে চাকরি করছেন বলে জানিয়েছে পিবিআইয়ের এ কর্মকর্তা।