ফ্রান্সে পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ের সরকারের পতন হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে নতুন করে তীব্র রাজনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
গতকাল বুধবার পার্লামেন্টে আনা অনাস্থা ভোটে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা সমর্থন দিলে তিন মাসের মাথায় বার্নিয়ের সরকারের পতন হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, গত সোমবার দেশটির সামাজিক নিরাপত্তা বাজেট নিয়ে বিশেষ ক্ষমতা খাটিয়েছিলেন তিনি।
কিছুদিন ধরেই ফ্রান্সে রাজনৈতিক অচলাবস্থা চলছিল। চাপে ছিল বার্নিয়ের সরকার। দেশের পরবর্তী জাতীয় বাজেট পাস করানো নিয়ে অচলাবস্থা আরও ঘোলাটে হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা বার্নিয়ের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব তোলেন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আরও চাপে পড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে তাঁর ভাষণ দেওয়ার কথা। এতে পরবর্তী পদক্ষেপ তুলে ধরতে পারেন তিনি।
বার্নিয়ে আজ দাপ্তরিকভাবে পদত্যাগ করেছেন। প্রেসিডেন্ট মাখোঁ তাঁর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেছেন। তবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ ও সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে ও তাঁর সরকারকে অন্তর্বর্তী দায়িত্ব চালিয়ে যেতে বলেছেন তিনি।
এদিকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নুসহ কয়েকজনের নাম আলোচনায় রয়েছে। তবে পার্লামেন্টে দলগুলোর ঐকমত্যের বিষয় থাকায় নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ এতটা সহজ হবে না।
নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগে মিত্র ও পার্লামেন্টের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন প্রেসিডেন্ট। সংস্কার করা নটর ডেম ক্যাথেড্রাল আগামীকাল শনিবার ঘটা করে উদ্বোধনের আগেই নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ দিতে চান তিনি।
রাজনৈতিক সংকট
ফরাসি পার্লামেন্টের বর্তমান অচলাবস্থা চলতি গ্রীষ্মে প্রেসিডেন্ট মাখোঁর ডাকা একটি আগাম নির্বাচনের ফলাফল হিসেবে দেখা দিয়েছে। ওই নির্বাচনে তাঁর দল রেনেসাঁ বেশ খারাপ করেছে।
ফ্রান্সের আইন অনুযায়ী, অন্তত এক বছরের মধ্যে কোনো নতুন পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা যাবে না। এর অর্থ, আগামী বছরের গ্রীষ্ম বা শরতের আগে কোনো নতুন ব্যয়সাশ্রয়ী বাজেট প্রণয়নের সম্ভাবনা নেই।
এমন পরিস্থিতিতে মাখোঁর অনেক রাজনৈতিক বিরোধী তাঁর পদত্যাগের জন্য ক্রমে আরও বেশি সোচ্চার হচ্ছেন। তাঁদের দাবি, তাঁর পদত্যাগ দেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান ঘটাবে।