ফারজানাকে সতীর্থরা আগেই বলেছিলেন…

0
138
সেঞ্চুরির পর ফারজানার উচ্ছ্বাস। আজ মিরপুরে

রানআউট হয়ে ফারজানা যখন ফিরছিলেন, পেছন থেকে দৌড়ে এসে তাঁর পিঠ চাপড়ে দেন ভারতের দুই–তিনজন ফিল্ডার। দুর্ভাগ্যজনক রানআউটটির আগের সোয়া তিন ঘণ্টায় ফারজানা যা করেছেন, তা পিঠ চাপড়ে অভিনন্দন জানানোর মতোই।

মেয়েদের ক্রিকেটে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটার হিসেবে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন, ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে ৫০তম ওভার পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে নিয়ে গেছেন দুই শর ওপারে—অভিনন্দন তো ফারজানার প্রাপ্যই।

দিনের শেষেও বাংলাদেশ–ভারত তৃতীয় ওয়ানডের প্রধানতম ছবির একটি উঠেছে ফারজানার ইনিংসটি। তাঁর সেঞ্চুরি ঘিরে গড়ে ওঠা ২২৫ রানের পুঁজি নিয়ে যে ম্যাচ টাই করেছে বাংলাদেশ। ৩০ বছর বয়সী এই ডানহাতি ব্যাটার অবশ্য নিজেকে সেঞ্চুরিকে বড় করে দেখতে রাজি নন। দল বড় স্কোর করতে পেরেছে, এতেই তিনি খুশি, ‘আমার সেঞ্চুরি কোনো ব্যাপার না। দলের রান পাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ফারজানা
ইনিংসের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলেছেন ফারজানা

ফারজানা অবশ্য শুধু শেষ ম্যাচে রান পেয়েছেন, এমন নয়। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৭ আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৪৭ রানের ইনিংস খেলেছেন। রান পাওয়ার সেই ধারাবাহিকতায় এবার বাংলাদেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ইনিংস তো পেলেনই, পেয়ে গেলেন প্রথম সেঞ্চুরিও।

ম্যাচ শেষের পুরস্কার বিতরণীতে ফারজানা জানান, সতীর্থরা নাকি আগে থেকেই বলতেন সেঞ্চুরিটা তাঁরই হবে, ‘এই সিরিজের শুরু থেকে ভালো ছন্দে ছিলাম। শুরুটা ভালো হচ্ছিল। আমার সব সতীর্থরা সব সময়ই বলত, আমাদের দলের কেউ যদি সেঞ্চুরি করে, সেটা পিংকিই করবে।’

পিংকি মানে ফারজানার ১৬০ বলে ১০৭ রানের ইনিংসটির আগে নারী ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান ছিল সালমা খাতুনের ৭৫। তবে সালমার রেকর্ড ভাঙা বা সেঞ্চুরি নয়, ফারজানার উদ্দেশ্য ছিল দলকে ভালো সংগ্রহের দিকে নিয়ে যাওয়া, ‘পরিকল্পনা ছিল যত দূর সম্ভব ব্যাটিং করা। যাতে ২৩০ পর্যন্ত যেতে পারি।’

ফারজানা–নিগারদের উৎসাহ দিতে মাঠে এসেছিলেন নারী সমর্থকেরা
ফারজানা–নিগারদের উৎসাহ দিতে মাঠে এসেছিলেন নারী সমর্থকেরাছবি : শামসুল হক

এই ২৩০–এর লক্ষ্যের কথা শোনা গেছে বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানার মুখেও। সেই লক্ষ্যের চেয়ে ৫ রান কম করেছে বাংলাদেশ। ম্যাচ টাই হওয়ার পর এ নিয়ে আক্ষেপ থাকবে, এটাও তাই স্বাভাবিক। তবে একসময় পরাজয় দেখতে থাকা বাংলাদেশ যে শেষ পর্যন্ত তা এড়াতে পেরেছে, তাতে ফারজানারই সবচেয়ে খুশি হওয়ার কথা। দল হেরে গেলে ইতিহাস–গড়া ওই সেঞ্চুরির আনন্দ যে অনেকটাই ম্লান হয়ে যেত!

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.