পুরোনো মামলা চাঙ্গা, যোগ হচ্ছে নতুনও

0
121

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চার মাস। এ সময় নির্বাচনী আমেজের মধ্যেই থাকার কথা সব রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর। অতীতে এ রকম সময়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকত জনপদ। তবে এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী এলাকায় নানাভাবে গণসংযোগ চালিয়ে গেলেও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতাকর্মী আছেন ‘দৌড়ের’ মধ্যে। দলটির নেতাকর্মীর প্রতিদিনের রোজনামচা আদালতের বারান্দা, এজলাস কিংবা আইনজীবীর কক্ষ ঘিরে আবর্তিত হয়। কর্মদিবসের শুরুটাই হয় আদালতপাড়ায়। দলের শীর্ষ নেতা থেকে তৃণমূল– সবার একই অবস্থা। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই রয়েছে ডজন ডজন মামলা; অনেক নেতার বিরুদ্ধে শত শত।

স্বাধীনতার পর দেশের বড় কোনো রাজনৈতিক দলের মহাসচিবের বিরুদ্ধে মামলায়ও ‘রেকর্ড’ হয়েছে। বর্তমানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধেই মামলা রয়েছে ৯৩টি। আর সর্বোচ্চ ৪৫১টি মামলা হয়েছে দলের যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের বিরুদ্ধে।

এসব মামলায় কারও শুনানি শেষ পর্যায়ে, আবার কারও সবে শুরু হয়েছে। কেউ আসছেন জামিন নিতে, আবার কেউ হাজিরা দিতে। এভাবেই দিনের পুরোটা সময় আদালত অঙ্গনে কাটাতে হয় তাদের।

ফলে নেতাকর্মীর রাজনৈতিক কর্মসূচি যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি এর প্রভাব পড়ছে ব্যক্তিজীবনেও। সময় দিতে পারছেন না ব্যবসা-বাণিজ্য ও পরিবার-পরিজনকে। মামলার খড়্গ মাথায় নিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী। অনেকেই কারারুদ্ধ।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীর অনেক মামলা নিয়ে মাঠে নেমেছে সরকার। আগামী নির্বাচনের আগে কীভাবে এ মামলাগুলো দ্রুত শেষ করে বিএনপি নেতাদের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো যায়– সরকার সেই অপকৌশল নিয়েছে। সরকার পোড়ামাটি নীতি অবলম্বন করেছে। প্রতিদিন পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। বিচার বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ও অন্যান্য বাহিনী একইভাবে কাজ করছে। এটা আওয়ামী লীগের পুরোনো খেলা।

তবে এসব বিষয় অস্বীকার করে সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘দেশে কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করলে এর বিচার হবে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলছে। অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি মানুষ হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাস, গাড়ি ভাঙচুর করেছিল; সেগুলোর বিচার কার্যক্রম চলছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। এখানে রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য নেই।’

বিএনপি নেতাকর্মীর অভিযোগ, বিরোধী দলের আন্দোলন দমন করতে এবং একতরফা নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে সরকার প্রতিবারের মতো এবারও মামলা-হামলাকে বেছে নিয়েছে। রাজপথের শক্ত আন্দোলন ব্যাহত করতে নেতাকর্মীকে আদালতপাড়ায় ব্যস্ত রাখা হচ্ছে। অনেক মামলায় মৃত, প্রবাসী, অসুস্থ আর বয়োবৃদ্ধদেরও আসামি করা হয়েছে। বেছে বেছে দলের সক্রিয় নেতাদের টার্গেট করে তাদের বিরুদ্ধে বেশি করে মামলা দেওয়া হচ্ছে। আবার পুরোনো মামলাগুলোকেও সক্রিয় করা হয়েছে। অনেক মামলার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে আনা হয়েছে। সরকারের এ পরিকল্পনা ঠিক থাকলে এক-দুই মাসের মধ্যে বেশ কিছু মামলায় নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ‘ফরমায়েশি’ সাজার রায় দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) নির্বাহী পরিচালক নূর খান বলেন, হঠাৎ বিগত দিনের কিছু রাজনৈতিক মামলার দ্রুত চার্জশিট,  চার্জ গঠন, সাক্ষ্য গ্রহণ এবং রায় হচ্ছে। এর আগে এসব রাজনৈতিক মামলার তেমন গতি ছিল না; অনেকটা স্থবির ছিল।

তিনি বলেন, আগামী সুষ্ঠু নির্বাচন করার আন্দোলন সামনে রেখে সরকারবিরোধীরা একত্রিত হচ্ছে। তাদের দাবি নিয়ে আলাপ-আলোচনা না করে সরকার পুরোনো মামলা সচল করে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাচ্ছে। এর মাধ্যমে এক ধরনের ভয়ের সংস্কৃতি গড়ে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

বিএনপির দপ্তর সূত্র জানায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে সারাদেশে দলটির নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৩৪ মামলায় ৪৯ লাখ ৪০ হাজার ৪৯২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত ২৮ ও ২৯ জুলাই ঢাকায় মহাসমাবেশ ও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ প্রবেশমুখে অবস্থান কর্মসূচিসহ বিভিন্ন সময়ের কর্মসূচি ঘিরে এক মাসে সারাদেশে ৩৩১টি মামলা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে ১৩ হাজার ৯৩০ জনকে। গ্রেপ্তার হয়েছেন ১ হাজার ৬৫০ জন।

খুলনা জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি মাসুদ খান বাদল বলেন, ‘আদালত, রাজপথ এবং মাঝে মাঝে কারাগার। এগুলোই আমাদের ঘরবাড়ি, প্রধান ঠিকানা। নিজের বাড়ি যেতে মাঝে মাঝে ভুল করলেও সপ্তাহের পাঁচ দিন আদালতে আসতে কেউ ভুল করেন না। গত ১০ বছর ধরে এভাবেই চলছে।’

তিনি বলেন, কোনো থানায় মামলা হলেই তার নাম দিয়ে দেয় পুলিশ। আদালত আর থানায় দৌড়াতে দৌড়াতে বিয়েটা পর্যন্ত করতে পারেননি তিনি। মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি শরিফুল ইসলাম বাবু বলেন, চাকরির মতো প্রতিদিন সকালে আদালতে হাজিরা দিতে হয়। গত ১৩ বছর ধরে আদালতের বারান্দাকে নিজের বাড়ির করিডোর মনে হয়।

বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, গত ছয় মাসে ৫০ হাজার নেতাকর্মী হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন পেয়েছেন। তবে নেতাকর্মী কারাগারে যাওয়ার পর জামিন পেলেও মুক্তি মিলছে না তাদের। তিনি বলেন, দলের  প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সারাদেশে তিন শতাধিক মামলা হয়েছে। প্রতিদিনই মামলার সংখ্যা বাড়ছে। সারাদেশে সক্রিয় নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তারের মহোৎসব চলছে।

বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, নেতাকর্মীকে বেকায়দায় ফেলতে কিংবা নির্বাচনের আগে আপসরফায় বাধ্য করতেই পুরোনো এসব মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে সরকার। তাদের সাজানো নির্বাচনে অংশ না নিলে অনেক নেতাকেই কারাগারে যেতে হতে পারে।

কার নামে কত মামলা

দলীয় সূত্র জানায়, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফের বিরুদ্ধে সাতটি, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে চারটি, মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে ৪৮টি, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে ৩৬টি, নজরুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে ছয়টি, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ছয়টি, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর বিরুদ্ধে ৯টি, সেলিমা রহমানের বিরুদ্ধে চারটি ও সালাহউদ্দিন আহমেদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা রয়েছে।

যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর বিরুদ্ধে ৩১৩টি, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরবের নামে ৩০৫টি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিরুদ্ধে ২৫৪টি, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলুর বিরুদ্ধে ২০৪টি, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর বিরুদ্ধে ১৮০টি, নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবির বিরুদ্ধে ১৮৪টি, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসানের বিরুদ্ধে ১৪৭টি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের বিরুদ্ধে ১০৬টি, নির্বাহী কমিটির সদস্য আকরামুল হাসানের বিরুদ্ধে ১০৩টি মামলা রয়েছে। আরও অনেক নেতার নামে মামলার সংখ্যা সেঞ্চুরি, হাফ সেঞ্চুরি পার হয়েছে অনেক আগেই। এখনও নিত্যনতুন মামলা যোগ হচ্ছে।

জেলা পর্যায়েও হাজার হাজার মামলা

ময়মনসিংহ উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদারের বিরুদ্ধে ২১টি মামলা ছিল আগেই। গত কয়েক দিনে আরও নতুন তিনটি মামলা হয়েছে তাঁর নামে। এলাকাছাড়া তিনি। ঢাকায় অবস্থান করে উচ্চ আদালত থেকে জামিনের চেষ্টা করছেন মোতাহার।

তিনি বলেন, পোশাকে পুলিশ চেনা গেলেও ডিবি পুলিশ চেনা যায় না। বাসায় গিয়ে খুব খারাপ আচরণ করে। দিনের বেলায় অবস্থান করতে পারলেও বাসায় রাত্রি যাপন করা যায় না।

ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক আকন্দ লিটন কৃষক দলের সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কতগুলো মামলা, তার সঠিক পরিসংখ্যান আমি নিজেও জানি না। তবে ৫০টির কম হবে না। এর মধ্যে ২০টির মতো মামলায় জামিনে আছি। আবার নতুন মামলা হয়েছে।’ মামলায় পাঁচবার জেলে গেছেন তিনি। জামিনে বাইরে এসেও পরিবারের সঙ্গে থাকা যায় না। সব সময় আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়।

মামলায় সবচেয়ে এগিয়ে আছে ঢাকা মহানগর। এখানে ১৭ হাজার ৫৮৩টি মামলায় আসামি ২ লাখ ৯১ হাজার ৯৩৫ জন। সিরাজগঞ্জে ২ হাজার ২৭০টি, নোয়াখালীতে ২ হাজার ৫৮৩টি, চট্টগ্রামে ২ হাজার ৩০১টি, ফেনীতে ২ হাজার ১৯৯টি, নারায়ণগঞ্জে ২ হাজার ৯১৩টি, ঢাকা জেলায় ২ হাজার ৩২৫টি, সাতক্ষীরায় ২ হাজার ৫৭৭টি, রাজশাহী মহানগরে ২ হাজার ৫৯৬টি, খুলনা মহানগরে ২ হাজার ৯১০টি, চট্টগ্রাম মহানগরে ৪ হাজার ৫৭টি, বরিশাল মহানগরে ২ হাজার ৪৮৪টি, সিলেট মহানগরে ২ হাজার ৪৬৭টি মামলা রয়েছে।

বিচার শেষ পর্যায়ে

বর্তমানে ওয়ান-ইলেভেনের সরকার থেকে শুরু করে ২০১৩-১৫ সালে করা মামলার কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। কিছু মামলা শেষ প্রান্তে। রাজনৈতিক এসব মামলায় বিএনপি মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, মধ্যসারি ও তৃণমূলের অনেক নেতাই আসামি।

এরই মধ্যে ওই সময়ের একটি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৯ বছর কারাদণ্ড, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর ৯ বছরের কারাদণ্ড, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের সাজার রায় বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত।

২০১৩ সালের একটি মামলায় যুবদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ১৭ জনের দুই বছরের সাজার রায় ঘোষণা করেছেন আদালত। এ ছাড়া বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, যুবদল সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের নেতা হাবিবুর রশিদ হাবিব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান, ছাত্রদলের সাবেক নেতা বজলুল করিম চৌধুরী আবেদসহ অনেকের বিরুদ্ধে থাকা মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে।

সর্বশেষ গত রোববার পুরোনো দুটি নাশকতার মামলায় মির্জা ফখরুল, রুহুল কবীর রিজভী, শিমুল বিশ্বাস, শামা ওবায়েদসহ ৬৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ঢাকার আদালত। মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে মামলাটি ১১ বছর আগের; ২০১২ সালের ডিসেম্বরে রাজধানীর পল্টন থানায় নাশকতার। অন্যটি আট বছর আগে রাজধানীর বাড্ডা থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে।

বিএনপি সমর্থক আইনজীবী নেতারা অভিযোগ করেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রাজনৈতিক এসব মামলা দ্রুত শেষ করতে বলা হয়েছে। এর পেছনে ‘বিশেষ উদ্দেশ্য’ রয়েছে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোর পাশাপাশি নির্বাচনে অযোগ্য করতেই সরকার মামলার কার্যক্রমে তড়িঘড়ি করছে। এতে সরকারের ‘দুরভিসন্ধি’ রয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

জামিন হলেও মুক্তি মিলছে না

আদালতপাড়ায় দৌড়ঝাঁপ করে জামিন পেলেও মুক্তি মিলছে না বিএনপি নেতাদের। একের পর এক পুরোনো মামলায় আটক করা হচ্ছে। উচ্চ আদালত থেকে ‘নো অ্যারেস্ট, নো হ্যারেজ’ নির্দেশনা থাকার পরও প্রতিকার মিলছে না বেশির ভাগ নেতার। পুরোনো মামলায় অজ্ঞাত আসামির তালিকায় জেলগেট থেকে আটক করা হচ্ছে কিংবা জামিন পাওয়ার পরই নতুন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।

দলের নেতারা জানান, সক্রিয় নেতাদের টার্গেট করে একের পর এক পুরোনো মামলায় আটক দেখিয়ে চরম হয়রানি করা হচ্ছে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব তানভির আহমেদ রবিন, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সাবেক সহসভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান মোসাব্বিরসহ অনেকে রয়েছেন।

বিএনপি নেতারা জানান, সারাদেশে ‘গায়েবি ও মিথ্যা মামলা’ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে কোনো এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটলেও উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি মৃত, কারাবন্দি ও প্রবাসীদেরও আসামি করা হচ্ছে।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার পুরোনো খেলা শুরু করেছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই বিএনপি নেতাকর্মীর নামে গায়েবি মামলার হিড়িক পড়েছে। বিনা পরোয়ানায় শত শত নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এভাবে আর পার পাওয়া যাবে না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.