মিস ইউনিভার্স এমন একটা সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম, যেটা নিয়ে অভিযোগ আর সমালোচনা যেমন আছে, তেমনি কৌতূহল আর আগ্রহেরও কমতি নেই। সত্যি সত্যি এই সুন্দরী প্রতিযোগিতা নারীকে ক্ষমতায়িত করে কি না, তা নিয়েও চলেছে দফায় দফায় বিতর্ক। তবে সময়ের সঙ্গে এই সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া নারীরা তাঁদের মেধা, যোগ্যতাকে বিকশিত করে হেঁটেছেন অনেকটা পথ। সময়ের সঙ্গে মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতার নিয়মকানুনও পেয়েছে গ্রহণযোগ্যতা। ৭২তম মিস ইউনিভার্সে সেরা ২০–এ জায়গা করে নিয়ে এবার যেমন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছেন ‘প্লাস সাইজ’ মিস নেপাল জেন দীপিকা গ্যারেট। তাঁর সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে স্টেরিওটাইপ ভাঙা নারীদের তালিকার প্রথম দিকেই থাকবেন মিস নেপাল জেন দীপিকা গ্যারেটছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

২২ বছর বয়সী জেন মিস ইউনিভার্সের ইতিহাসে প্রথম প্লাস সাইজ মডেল, ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

জেনের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে, মা-বাবা দুজনই যদিও নেপালি। এখন তিনি কাঠমুন্ডুতেই থাকেন ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

পেশায় জেন একজন নার্স, পাশাপাশি তাঁর একটা ব্যবসাও রয়েছে, ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

ইনস্টাগ্রামে তাঁর অনুসারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ২ লাখ ৪০ হাজার, ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার জেনের ওজন ৮০ কেজি। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্রে বুলিংয়ের শিকার হয়ে তিনি নেপালে ফিরে আসেন। নেপালেই গড়ছেন ক্যারিয়ার, ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

৭২তম মিস ইউনিভার্সের শুরু থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে মনোযোগ কেড়েছেন জেন। মঞ্চে উঠলেই তাঁকে চিৎকার করে সবাই স্বাগত জানান। জেন ‘বডি পজিটিভিটি’র একজন অ্যাম্বাসেডরম ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

মিস ইউনিভার্সের মঞ্চে এই সুন্দরী বলেন, ‘আমি এমন সব নারীদের প্রতিনিধিত্ব করি, যাঁদের শরীরে ভাঁজ আছে, যাঁরা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে নিজের সঙ্গেই নিজে কঠিন লড়াইয়ে লিপ্ত, যাঁরা তথাকথিত কোনো সৌন্দর্যের মাপকাঠিতে পড়েন না। আমি বলতে চাই, আমি সুন্দর, আমি নিজেকে নিয়ে গর্বিত। আর আপনিও সুন্দর। নিজের অনন্য সৌন্দর্যকে গ্রহণ করুন, উদ্যাপন করুন।’ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

দীর্ঘ সময় পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোমে (পিসিওএস) ভুগেছেন মিস ইউনিভার্স নেপাল জেন গ্যারেট। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে নারীর শারীরিক কিছু পরিবর্তন এবং ওভারিতে বিশেষ ধরনের কিছু সিস্ট তৈরি হওয়া এ সমস্যার সামগ্রিক নাম পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম। অনেক সময় জিনগত ও ইমিউন সিস্টেমের দুর্বলতাও এ সমস্যার জন্য দায়ী। অতিরিক্ত ওজন থেকে শুরু করে অনিয়মিত মাসিক অথবা মাসিক বন্ধ থাকা, ব্রণ এবং মুখ, গলা, বুক ও পেটে অতিরিক্ত লোম, গলা, হাত বা শরীরের বিভিন্ন ভাঁজে কালো ছোপ ছোপ দাগ, মাথার চুল পাতলা হওয়া বা পড়ে যাওয়া, বন্ধ্যত্ব, গর্ভপাত—এগুলো পিওএসের লক্ষণ।ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

মিস নেপাল জানান, পিওএসের কারণে বেশ কয়েক বছর তিনি বিষণ্নতা আর হীনম্মন্যতায়ও ভুগেছেন। ‘হোলা’ ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জেন বলেন, ‘ধীরে ধীরে আমি নিজেকে গ্রহণ করি, ভালোবাসি। এখন যে আমি আমাকে ভালোবাসি, আমার শরীর নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্য আর আত্মবিশ্বাসী—এটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা।’ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

সেরা ২০-এ জেনের যাত্রা শেষ হয়ে যাওয়ার পর ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জেন লেখেন, ‘যাঁরা আমাকে সমর্থন জুগিয়েছেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। “রিয়েল সাইজ বিউটি”র প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে আমি গর্বিত। সারা বিশ্বেই তথাকথিত সৌন্দর্যের ধারণা ভেঙে গুঁড়িয়ে ফেলে নতুন করে লেখার একটা ছোট্ট প্রয়াস হয়ে থাকবে আমার মিস ইউনিভার্সের যাত্রা। এটা একটা জীবন বদলে দেওয়া অভিজ্ঞতা।’ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে

মিস নেপাল সান সালভাদর থেকে ফিরে বলেছেন, ‘আমার ভেতরে যে আগুন জ্বলছে, তা আমাকে আরও শক্তিশালী আর উজ্জ্বল করবে। আমাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এখন সবকিছু পেছনে ফেলে কেবল এগিয়ে যাওয়ার পালা, কেবল আকাশে ওড়ার পালা।’ছবি: ইনস্টাগ্রাম থেকে