পার্বত্য জেলায় মামলা দায়েরে সম্পত্তির মূল্যের ওপর কোর্ট ফি দাখিল প্রশ্নে রুল

0
201
হাইকোর্ট।

পার্বত্য জেলায় ভূমি নিয়ে বিরোধের এক মামলায় সম্পত্তির মূল্যের ওপর কোর্ট ফি দাখিলসংক্রান্ত রায় কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন।

রাঙামাটির রাঙাপানি মৌজায় অবস্থিত একটি সম্পত্তি নিয়ে মামলা দাখিলের ক্ষেত্রে সম্পত্তির মূল্যমানের ওপর কোর্ট ফি নিয়ে রাঙমাটি পার্বত্য জেলা জজ আদালতের দেওয়া রায়ের বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়।

রাঙামাটির বাসিন্দা রিনা চাকমা, গীতা চাকমা ও রিতা চাকমা নামের তিন বোন ওই রিট করেন। আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. সুলতান উদ্দিন ও নিকোলাস চাকমা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এম এম জি সারোয়ার পায়েল।

আইনজীবীরা বলছেন, দেওয়ানি মামলা করতে সম্পত্তির মূল্যমানের ওপর নির্দিষ্ট হারে ফি বা খরচা হিসেবে অর্থ আদালতে জমা দিতে হয়, যা কোর্ট ফি (অ্যাড ভ্যালুরেম) হিসেবে পরিচিত। এটি সম্পত্তির মূল্যমানের ওপর নির্ভর করে। সমতল ভূমিতে ভ্যাটসহ এই কোর্ট ফি সর্বোচ্চ ৪৬ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, রাঙামাটি সদর উপজেলার ১০২ নম্বর রাঙাপানি মৌজায় অবস্থিত দশমিক ৭১ একর জমি থেকে অবৈধ দখলদার উচ্ছেদে ২০১৩ সালে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি মামলা করেন রিনা চাকমা ও তাঁর দুই বোন। ২০১৮ সালের ১৭ মে মামলা নামঞ্জুর করেন আদালত। এর বিরুদ্ধে তাঁরা রাঙামাটি পার্বত্য জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। আদালত মামলাটি পুনরায় শুনানি করতে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পাঠান।

নথিপত্রে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর রাঙামাটির যুগ্ম জেলা জজ আদালতের দেওয়া আদেশে বলা হয়, দ্য কোর্ট ফিস অ্যাক্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির তফসিলভুক্ত। এ জন্য আইন অনুযায়ী মূল্যানুপাতিক কোর্ট ফি দাখিলে মামলায় মূল্যায়ন প্রয়োজন।

এই আদেশের বিরুদ্ধে রাঙামাটি জেলা জজ আদালতে আপিল করেন তিন বোন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর রায় দেন জেলা জজ আদালত। এতে বলা হয়, যুগ্ম জেলা জজের আদেশে আইনের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি, তাই ওই আদেশে হস্তক্ষেপ করার কোনো সুযোগ নেই। ২০১৯ সালের ৩ অক্টোবর দেওয়া আদেশ বহাল রাখা হলো।

এ অবস্থায় আপিল নামঞ্জুর করে জেলা জজ আদালতের দেওয়া রায়ের বৈধতা নিয়ে রিটটি করেন তিন বোন। শুনানি নিয়ে আজ হাইকোর্ট ওই রুল দেন।

পরে আইনজীবী সুলতান উদ্দিন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধির তফসিলে স্যুট ভ্যালুয়েশন অ্যাক্ট ও কোর্ট ফিস অ্যাক্ট নেই। তাই পার্বত্য তিন জেলায় (রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান) সম্পত্তি নিয়ে মামলা দায়েরে কোর্ট ফি অ্যাক্ট প্রযোজ্য নয়। ২০১৯ সালের আগপর্যন্ত দেওয়ানি মামলা করতে কোর্ট ফি লাগত না। এ অবস্থায় রাঙাপানি মৌজায় অবস্থিত ওই সম্পত্তি নিয়ে মামলা দায়েরে কোর্ট ফি দাখিল বিষয়ে রাঙামাটি জেলা জজ আদালতের দেওয়া রায়ের বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। বিবাদীদের দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পার্বত্য জেলায় সম্পত্তি নিয়ে মামলা দাখিলের ক্ষেত্রে সম্পত্তির মূল্যের ওপর কোর্ট ফি জমা দিতে হবে কি না, রুল নিষ্পত্তি হলে তা জানা যাবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.